ফুলের দুই কাণ্ড ও অন্যান্য কবিতা

 

স্বাদ

বাঘ আর হরিণের মাংস
এক ডেকচিতে রান্না হলে
ঝোলে বোঝা যায় না কোনটা হরিণের
কতটা বাঘের

কেবল বাঘের মাংস ঠোঁটে উঠে এলে
পরিবর্তন ঘটতে থাকে রুচির আবেগে
আমরা একেকজন মহাপশু হয়ে উঠি।
পাশে হরিণ চিরাচরিত অসহায়, হায়!
এ-তরকারির ঝোলেও শ্রেণিবিভক্ত রূপ
এবং ঔপনিবেশবাদের দুর্দান্ত মহড়া
বাঘ-রান্না করবে কে!  


কাঠের শোক

বনের ভেতরে কাঠুরিয়া
কাটছে তরুণ বুক চির-চির
ওদিকে গাছের শীর্ষে কালো কালো মেঘ বাঁধা;
এই শঙ্কা নিয়ে কাঠঠোকরা পাখিটি
জিরেনের ক্ষমতা খোয়ালে
কালো মেঘেরা আরও কালো হতে থাকে।

পাখি ভাবছে নিবাস শেষ
মধ্যদুপুর খান খান করে কাঠুরিয়া
কাঁদছে কাঠের শোকে। 


ফুলের দুই কাণ্ড

বাবু ফুল নেও তুমি
ফুল দিয়ে করো ঘাটি
আমরা পাশের গলি থেকে
ফুল কিনি-ফুল খাঁটি।

ফুল চেনো তুমিও তোমরা
নরম পাপড়ি বোঝো ভালো
দিন দুপুরে খুশবু ছুঁয়ে
নরম শরম অর্ঘ্য ঢালো। 

আমরা ফুলমি-শুধু ফুল বেচি
অন্য কিছুতে বুঝি না আপডেট
আমরা ক্ষুধা কে জানি তবু
চিনি না কেমন ফুল
চিনি পেট।


খৎনা

ধরুন চাঁদের খৎনা হলো
শুক্লপক্ষের বাড়ন্ত রাতে
তবে, চাঁদের ধর্মের নাম কি মুসলমান?
নক্ষত্র শরীর থেকে যে আলোর ধারা
এক কক্ষপথ থেকে ঘুরে অন্য মহাবৃত্তে গেল
তার কোনো ধর্ম নাই
নাস্তিকতা এবং আস্তিকতা-ও নাই
সারাক্ষণ পেরেশানে কাতর সুন্নতি চাঁদ
মানবতার নিঃস্বতা নিয়ে...


যখন এক এবং একা

তুমি যখন এক এবং একা
আমি তখন ডুবো
তুমি যখন দুই
আমি তাকাতাম
তোমার শরীরে

দুধসাদা জল
ছুঁয়ে নেমে যেত আমার হারমোনিকা।
শরীর সুন্দর মোচাকৃতি
ধবল একটা ঘাট
কলার তোড়ের শিশু, বাঁধা পেটে
ভিটামিন দেবে সকালে নতুন সূর্য।
অভিমন্যু চক্রব্যূহে হারিয়ে ঠিক
জানি না কোথায় দিকচক্রবাল
আমি আঁশ হয়ে
লটকে থাকব ভোরের আজানে
শিশুটি আসবে কাল।