গোধূলি ও অন্যান্য কবিতা

 

জীবন

এই যে জীবনরে আমার
লোহার তামার
মনে হয়
কেন যে!

 

বাংলা কবিতা

এ-শরীর আসলে শ্মশান
শ্মশানে অগণিত চিতা;
তার মধ্যে একটা আমার।
সেটার উপরে বসে

দ্যাখো সীতা,
মদ খায়
ডোম আর বাংলা কবিতা!

 

গোধূলি

রোজ বিকেলের কিছু পরে
সন্ধ্যার সামান্য আগে আগে
খুনোখুনি মনে, রক্তধারা

আকাশটা ভরে যায় দাগে।


জবা ফুল

একটা জবা ফুলের মূর্খতায় আপনার হাইপারটেনশন।
ঘুমের সাথে মেটাতে বিরোধ
চাইছেন বড়ির মধ্যস্থতা।
অথচ
শেষরাত আপনাকে চুলের মুঠি ধরে
উঠিয়ে নিয়ে
বসিয়ে রাখছে বারান্দায়।
অস্থিরতা হাঁটাতে হাঁটাতে হাঁটাতে হাঁটাতে
নিজের থেকে কমসে কম
হাজার মাইল দূরে নিয়ে যায়

আর সেখানে গিয়ে দেখছেন,
লোকে জবা ফুল রান্না করে খায়!


যেভাবে রাত নেমে আসে গ্রামে

নদীর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সব গ্রামেই
একটা মীরাবাড়ি থাকে
যে বাড়ির পেছনে
গাছের দঙ্গল ফুঁড়ে দাঁড়িয়ে থাকে
একা, আচানক তেঁতুলগাছ।
গাছটার শরীর ঘেঁষে বসা গোলাকার পুকুরের
কোমর ফুঁড়ে বেরিয়ে পড়ে
কয়েকটা শেকড়।
প্রতি সন্ধ্যায়
সেইসব অজগর শেকড়ের পেটে
আলগা হয়ে ঝুঁকে
ওজু করেন কোনো এক আয়নাল মীর।
এরপর ধীর পায়ে ক্রমে তিনি যান
বাড়ির দরজায়। মসজিদের পাশে দাঁড়ান।
ফলে তার কণ্ঠে বেজে ওঠে মাগরিবের আজান।
আর সেই রাতের ঘোষণা শুনে
আকাশে আসেন ভগ্নস্বাস্থ্য চাঁদ,
গ্রামের দিকে অন্ধকার আসে তেড়ে।
মাঠে খেলতে যাওয়া বাচ্চাকাচ্চারা
সন্ধ্যা নিয়ে লোফালুফি করতে করতে ফেরে বাড়ি।