বায়ুর খোঁজ ও অন্যান্য কবিতা

 

নার্সিসাসের মুখ

নার্সিসাসের মুখ ভেঙে যায় যখন শান্ত থাকে না জল
ঢেউয়ে ঢেউয়ে বিদীর্ণ মুখ যেন ভেঙে যাওয়া কাচের মতন।
আগুনের ওম নিয়ে পড়ে থাকা খড়কুটো নিজেকে রেখেছে ঢেকে
যেন বহুজন্মের ধ্রুপদিপ্রেম নিয়ে চুপ হয়ে বসে আছে তল্লাটে তল্লাটে।
পৃথিবীর সবচেয়ে করুণ, বিকল বিকেলের ছায়া
দেখে যেন মনে হয়, কী করুণ নিস্তেজ বেদনায় শুয়ে আছে!
রেখেছো কি খোঁজ ছায়ার গভীরে কে কলকাঠি নাড়ে?
ক্লান্তির কফিনে যে নদী মরে আছে বহুকাল
তাকে কি নাড়াবে না মেঘ, স্রোতের দীর্ঘশ্বাস?


বায়ুর খোঁজ

অন্ধের হাতি দেখার মতো 
কানকে কুলো ভেবে উড়িয়েছি কতো কতো ধান।
বাতাসের মতো ঝড় এসে নিয়ে গেছে ধান রেখে গেছে চিটে।
এ কেমন বাতাসের দুর্বিনীত সন্ত্রাস বলো?
এখন কেবলই শুধু ফাঁকা ফাঁকা লাগে বিশাল চাতাল।
বলে যাও কোন বায়ে থেকে যাবে ধান,
নিয়ে যাবে চিটে আর খড়-কুটো।
তেমন বায়ুর খোঁজ দেবে নাকি কাল?
নাকি লেগে যাবে মহাকাল?


নিয়তি

কেবলা ফেরাতেই দেখি কী অসীম নগ্নতা!
ডুবে থাকার মতো দম নিয়ে নিজেকে বাঁচাবো বলে,
অনিকেত দিগন্ত পারে যতদূর চোখ যায়, 
ততদূর বেঁধেছি নিজেরই তো ঘর।
যে ভাষা আমার বোধে নাই, চিন্তায় খেলেনি কখনো
তাকে নিয়ে বসতি আমার, এ কেমন নিয়তি আমার বলো?
আমার চোখ থেকে চোখ, মন থেকে মন সরে যায় যতদূর।
যার আর কোন দূর নাই।
তবুও, ভাষার নতুন বিন্যাসে নিজেকে হারাতে বসেছি হামেশাই।