চরিত্র ও অন্যান্য কবিতা
একটি প্রেমের কবিতা
আমাদের টয়লেটে ‘ম্যারাডোনা’ নামাঙ্কিত একটা বদনা ছিল। ওই বদনা-কারিগর আর্জেন্টিনার ভক্ত না অ্যাংরি ব্রাজিল, বোঝা মুশকিল। অনেক কিছু না বুঝেই আমরা তবু বেঁচে আছি।
তোমার আমার সম্পর্ক চুকেবুকে যাবার আগেই পৃথিবীতে ভেঙে পড়ল টুইন টাওয়ার। কী আশ্চর্য! পরস্পরকে ডাম্প করার দিনেই ওই পাম্প মেশিনের ধারে ফুটল কাঠগোলাপের ফুল।
এরও বহুদিন পর তুমি লিখেছিলে, ‘আমার স্বামীর স্বভাব অবিকল তোমার মতো।’ কেন লিখেছিলে?
অথচ একথা বলোনি, তুমি একটা কুকুর পুষেছিলে আমার নামে। কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউতে একদিন দেখলাম তোমার স্বামীটি তাকে ডাকছে: ববি, ববি। সেও লাফিয়ে উঠছে: ঘেউ, ঘেউ...
পৃথিবীতে কাকতালীয়তাহেতু এইসব ঘটে, তা কিন্তু বলবে না কেউ।
সরলাঙ্ক
এখনো সকাল হয় প্রথমত পাখিদের গানে।
পাখিরা কি গান গায়? সে কথা তারাই ভালো জানে।
যেমন তুমিই জানো, এই তুমি সেই তুমি কিনা।
যেমন পৃথিবী জানে, সেই একমাত্র ভূমিহীনা।
এখনো সন্ধ্যাটি নামে বন্ধ্যা নারীদের প্রার্থনায়।
পাপে পূর্ণ দুটি মন যখন কিছুটা পুণ্য চায়।
ভেবে ভেবে ভালো লাগে, ঘোচে বেঁচে থাকার আতঙ্ক।
তুমি যে পথেই চলে যাও, শূন্যফল সরলাঙ্ক।
চরিত্র
কী করে চরিত্র নষ্ট করা যায় ভেবে গেছিলাম এক
চরিত্রহীনের কাছে।
এমন নয় যে, নরাধম বাড়ির পাশেই থাকে।
ঠিকানাটা নেটে সার্চ দিয়ে পাওয়া।
গিয়ে জানলাম, গত বছর সে মারা গেছে করোনায়।
চরিত্রহীনের বউ তবু কফি খাওয়ালো আমাকে
জংধরা শীতের সকালে।
চরিত্রহীনের পুত্রকন্যা সাথে নিয়ে তাই
কবরে গোলাপ রেখে আসলাম।
ফিরে এসে বুঝলাম, কোনো লাভ হলো না আসলে।
কী করে চরিত্র ভালো করা যায় ভেবে অতএব
যেতে হলো একদিন চরিত্রবানের কাছে।
সেখানেও একই কাণ্ড। প্রত্যেকে চরিত্র ফেলে রেখে
কী সুন্দর মরে গেছে!
শালিক ও টিয়া
নদীটির নাম লোহালিয়া।
ঠিকানা সাগর-প্রান্ত। যেখানে মেঘের চোখে
মাছেরা উতল, উদ্ভ্রান্ত—
তবু জল বয় সহজিয়া।
পৃথিবী কি তেমনি চলেছে বয়ে?
জানে না শালিক-মন। জানে শুধু টিয়া।
কাউকে বোঝে না কেউ।
তবে আর কোন উপদ্রবে
আসবে দুজন ফিরে
এমন কূজন-উৎসবে?
দুজনের দুটি বাক্য হবে
একটি ভাষায় বরণীয়া?—
পায়রাবন্দর থেকে এই
বিমুখ প্রান্তর—আশুলিয়া?
চরিত্র খুলে সবাই মরে যায় কেনো এটা বুঝা বড় দায়
আহমদ সোলতান
ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২ ২২:০০
সূক্ষ্ম রসবোধ দুর্দান্ত লাগে। যা্ অন্য কারও নেই। আর স্বতন্ত্র কবিভাষা বলে যদি কিছু থাকে, সেটাতো আছেই
Zahurul Islam
ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২ ১৭:২৪