অবদমন ও অন্যান্য কবিতা

 

চুক্তি 

আমি একটা পিছিয়ে পড়া দেশ
তোমার দেশ সদ্য সমুজ্জ্বল 

চাষের জমি শুকিয়ে গেছে খরায়
তোমার জল আমার দিকে 
একটুখানি আসতে দিয়ো...

একটু যেন আমার দিকে গড়ায়

 

সম্মতি 

মুখে অনিদ্রার দাগ—দাগ, নাকি বিরহ-আঁচড়
বৃষ্টির শুরুর মতো সোঁদাঘ্রাণ ধুয়ে দিচ্ছে মাটি— 
তাবৎ রৌদ্রের বিষ—মেয়েটির একলা ম্লানমুখ 
বরফ শরীর ভেঙে জেগে উঠছে নদী—ঝগড়াঝাঁটি 

সুখের অভাব লাগে—ফুরিয়েছে আনাজপাতি, নুনও
বাহুলগ্নে চাঁদ নিয়ে, ঝরেপড়া কুর্চিফুল, ঘুমো!

এ অভাব জন্মনিরোধক, ছুঁয়ে দিতে বাধা নেই
প্রেমে পাপ নেই কিছু, চুমুতেও নেই কোনো ভুল
খুলেছ সিঁদুরদানি, লাল হয়ে উঠেছে পৃথিবী 

সম্মতিসূচক হেসে ঝরে পড়ে ভোরের বকুল।

 

অবদমন 

হাত বাড়ালেও যাওয়া হচ্ছে না আমার। দূরের ট্রেন আসে, ক্ষণকাল থামে, ছেড়ে যায়। পেটভর্তি মানুষ, পেটভর্তি বিষাদ। আমার চিরুনি থেকে যায় যথাস্থানে। কারুর ভালোবাসা গাঢ় হয়ে বসে, কার্নিশে। সে শুধু অশ্রুপাত শেখায়। 

পাখির ওড়া দেখে বাতাসের পথ জেনে নিই। ঈষৎ মমত্ব ছাড়া আর কিছু উড়তে দিই না সহজে। দরজা বন্ধ, জানালা খুলে রাখি। মেজেতে নরম হয়ে বসে ট্রেনের হুইসেল।

 

পথ

তাড়া নেই। 
আমার সমস্ত পথ সরু হয়ে গেছে। 
যারা আসছে বা যাচ্ছে, সারা হোক আসা-যাওয়া
ঠেলাঠেলির ক্লান্তিতে আর নয়

আমি বরং চালের থেকে পাথর তুলে নিই
পরিপাটি রাখি বিছানা
দুঃখগুলো একটা পাত্রে রাখলাম
উনুন জ্বলছে। সুগন্ধি খাবার হয়ে ফুটে উঠছে হাওয়ায়।

তারপর, সমস্ত চিৎকার মেঝেতে শুইয়ে দিয়ে করতে পারি অনিঃশেষ সঙ্গম
কিন্তু আমি তাতেও যাব না

ইরেজারে ঘষে তুলব পথের কুসুম
উপরে উঠতে গেলে, পতনের সিঁড়িকেও জানতে হয়।
আমি আপাতত কুড়োতে যাব মানবকঙ্কাল।