অপরাহ্ণ ও অন্যান্য কবিতা
দিনে দিনে জানা হচ্ছে
দিনে দিনে জানা হচ্ছে
আমার ব্যাপারটা কী
কিন্তু এতই দূরের সেসব পাসপোর্টটিকেট হাত থেকে ফেলে
হেঁটে ভিন স্টেশনে অভিভূত হেঁটে যাওয়া
আবছা দেখাচ্ছে বড়ো
কেউ একজন না বলে দিলে...
আচ্ছন্নতা...
একটি কুয়ো খুঁজে বের করে আমাকে
ঢুকিয়ে ঢাকনা বন্ধ করেছে যে
সে নাকি একমাত্রজন
আমার, আমি
তারই ভরসায়
দেশে দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম
প্রিয় নাটকের সংলাপ মুখে নিয়ে
আমিই রয়ে গেছি সব-সম্মুখে
আগে জানতাম আমারই কীর্তি আমিই এনিছি তোমাদের
চরাচরে
বৃদ্ধ হে, যুবতী, শিশুরা
পরে খুলল চোখ
বেলুন উড়ছে, তোমরাও উড়ছ
পা ভেঙে পড়ে যাচ্ছ রাস্তায়
ভাবতে শুরু করেছিলাম আমারই অভিভাবকত্ব
আমার দেখাশোনার
এক বেলা না যদি খেয়েছ, না যদি ঘুমিয়েছ কেউ
(চোখ না খুলতে শুধু ঘুম পায় আমার!)
একবার একজন সত্যমতো একটা কিছু বলে উঠেছ যদি
হাওয়ারা হেসে উঠছে হো হো
ওরাই তুলছে তা হলে দেয়াল
পাহাড়কে দূরে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে যখন ইচ্ছারা
আগে জানতাম
আমিই রয়ে গেছি সব-সম্মুখে
আবার সেই হারারে
আবার সেই হারারে, জিম্বাবুয়ে, আবার সেই তিন-চারতলা বাড়ি
দূরের নির্জনতায়
চোখের ফ্যাকোলেন্সে ধু ধু সমতল ঘাসের প্রান্তর
শাদা পোশাকে বিষণ্ন কয়েকজন দ্বিপদী পোকা
দূরে নিশ্চয়ই ঘেঘের পাহাড় আছে, সেখান থেকে আসছে সংকেত
তা না হলে কেন এমন নিবিষ্টমনে কেউ দাঁড়িয়ে
কেউ ছুটন্ত
গোলমতো কিছু একটার পেছনেই কি ওরা ছুটছে
এই দুপুর লম্বা হতে থাকবে, আর কোনও এক সংকেত পেয়ে ওরাও ছুটবে?
তিনতলা বা চারতলা বাড়িটায় কেন ওরা যাচ্ছে না
জেনে নিচ্ছে না ওরা আসলে কী করবে
খাবার সময় ওদের কখন হবে
কথা বলার সময়
যাবার সময়
অপরাহ্ণ
কাটা গাছটা দাঁড়িয়ে—ট্রেনের সিগন্যাল
সবুজ বা লাল বাতি নেই
পাশের বাড়ির বারান্দায় দুটো শাদা পাখিকে চুমু খেতে দেখেছি একটু আগে
লাল জামা ও ধূসর লুঙ্গিতে একজন রিক্সাঅলা, প্যাসেঞ্জার যাচ্ছে
ছোটবেলায় ইস্কুলে আমাদের বাক্য লিখতে বলা হতো, না, হতো না মনে পড়ছে না
একটা গাড়ি গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের নারী ক্রিকেটারের গলায় চিৎকারে
আমি অনেক দিন কোনও নাটক দেখতে যাইনি
এখন কিনা চারতলা ফ্ল্যাটের ব্যালকনিতে
শিল্পকলা-থিয়েটারের সবেশেষেরটির নাম ছিল... না না, মনে পড়ছে না
একটি দৃশ্যের পর অস্থির অপেক্ষা ছিল পরের দৃশ্যের
এখন যে মঞ্চসজ্জা নেই, নির্দেশনাও নেই
একটি ছুরিবঁটিধারকরাঅলা এসে চাকা ঘুরিয়ে ঝরর ঝরর করছে
বাচ্চারা কোত্থেকে এসে খেলছে নিচে
দুপুর একটি বেলুন
পাড়ার ফাংশন আর আজমপুরের অফিস হাঁটছে একসঙ্গে
আমি সেই জানালায় আবার
যার অনুবাদ করেছেন পারভিন একটি বইতে
যতই ভাবি কালের ক্ষেত্রে পাস্ট টেন্স আর হয় না
তত কালো ইঞ্জিনের শেয়াল-চিৎকার
একটি টেলিফোন করার আগে নার্ভাস একজন হেঁটে চলেছে
পথে
আচ্ছন্ন ভাবনায়
দুপুর একটি বেলুন তার মুখের বাঁধন গেছে খুলে
...
কয়েক লাইন লিখছি
লেখাটা সর্বস্ব
আগে বা পরে হোক, বেরিয়ে-পড়া বন্ধ হতেই পারে
বন্ধু যখন নই
নিজেকে এখন শত্রু ভাবতেই পারি
যতই কাছের মনে হোক
বেশ অনেকটা দূরেই রেখেছি নিজেকে
যদিও সুর ধরতে পারব না
কোনও শহরের
মহল্লার
...
একজনের হ্যালুসিনেশন ঢুঁ মারছে অন্যজনের মাথায়
পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি
কিন্তু সন্দেহও এখন আর কোনো রোগ নয়
যে, সিদ্ধান্ত টানব
আয়োজকদের কোনো ফাংশনেই আমি গেলে কি না গেলে কি
আচমকা স্তব্ধবাক আমি
বোর্ডে বা দেয়ালে যা লিখব
তা লিখব
অ আ ক—তো নিশ্চয় নয়