অধিকার ও অন্যান্য কবিতা

 

অধিকার

প্রকৃতিতে যে যার যতটুকু পাওনাদার, ততটুকু বুঝে নেয় কড়ায়-গণ্ডায়।
যেমন বাতাসের সংকেত বুঝে নেয় ধানফুল।
বীজ যেমন মাটি থেকে বুঝে নেয় অঙ্কুরোদ্‌গমের সবটুকু অধিকার।
ঋতুর সংকেত যেভাবে বুঝে নেয় বৃক্ষ; ফোঁটায় শরীরে তার ফুলের অদ্ভুত অলংকার।
আলোর বাজারে যেমন বেসাতির অধিকার বুঝে নেয় ফসলের মাঠ।
আকাশ যেমন বুঝে নেয় আকাশের সবটুকু অধিকার।
মৌসুমী ভালোবাসা সে-ও তো কাউকে না কাউকে নাড়ায়;
দাবি করে হৃদয়ের অধিকার।
পালিত পাখির মতো আর কত ওড়াউড়ি?
বুঝে নাও অবাধ আকাশ, বুঝে নাও বনের বাড়ি

 

সান্নিধ্য

আমি বরং নিজ হাতে কেটে খাব টালের পুঁই
অনন্ত সবুজ পুঁই ছোঁয়াব মরচে পড়া হাতে
ব্যথিত অতীতের যত স্মৃতি ধুয়ে নেব শিশিরের জলে

সমুদ্র দেখিনি কখনো
কাটিনি কখনো সাঁতার।
সীমাহীন হাওয়ার সমুদ্রে না হয় দেখে নেব পাতাদের তুমুল সাঁতার

 

অনার্য

বাজুতে রাখি বেঁধে দিও কোনো এক শ্রাবণের পূর্ণিমায়
থাকুক না-হয় আকাশের দেহখানি মেঘে ঢাকা সারা দিনরাত
ঘিয়ের প্রদীপ জ্বেলে রেখো আমাদের চারপাশে
যেন জ্বলে ওঠে মন শিশিরের কণার মতো

অনার্য বলে যদি কেউ গালি দেয়, দিক।
আবার যদি উচ্চারিত হয় সেই অমোঘ সত্য কথা, হোক।
বারবার আসুক ফিরে আমাদের দরজায়; খুলে যাক খিড়কির খিল।
কেউ এসে বাজুতে বাঁধুক এক শ্রাবণের পূর্ণিমায় সেই দুর্লভ রাখি
আবার বার্তা নিয়ে আসুক পথ ভুলে যাওয়া বনের সুখপাখি