সাতক্ষীরার জানা-অজানা পুরাকীর্তি!
কোনো অঞ্চলের প্রাচীন নাম জানতে আমি বরাবরই আগ্রহী। সেভাবেই খুঁজে পাওয়া সাতক্ষীরার প্রাচীন নাম। নামটি দারুণ মনকাড়া—‘বুড়ন দ্বীপ’। রামায়ণ মহাভারতের তথ্য অনুসারে, এ অঞ্চলে মানুষের বসতি শুরু হয় প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে। আলেকজান্ডার ভারত আক্রমণ করেছিলেন খ্রিরীন নাম খ্রিস্টপূর্ব ৩২৭ অব্দে। তাঁর ভারত আক্রমণের সময় গঙ্গার মোহনায় গঙ্গারিডি নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। বর্তমান সাতক্ষীরা জেলা ছিল এ রাষ্ট্রের অধীন। আলেকজান্ডারের পর মৌর্য ও গুপ্ত যুগে বুড়ন দ্বীপ পরিচিত ছিল খাড়িমণ্ডল নামে। চন্দ্র বর্মন খাড়ি অঞ্চল দখল করেন চতুর্থ শতকে। অষ্টম থেকে একাদশ পর্যন্ত পাল ও বর্মন রাজারা শাসন করেন এই বুড়ন দ্বীপ। তারপর এই অঞ্চলে আসেন সেন রাজারা। বখতিয়ার খিলজির বঙ্গ বিজয় থেকে শুরু হয় মুসলিম রাজত্ব। এরপর আসেন বারোভূঁইয়ারা। যুগে যুগে আবির্ভূত হতে থাকে ব্রাহ্মণ রাজারা, মোগল ও ইংরেজরা। ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে মহকুমার মর্যাদা পায় সাতক্ষীরা। তারপর ১৯৮৪ সালে এটি জেলায় উন্নীত হয়। দীর্ঘ শাসনের এই পরিক্রমা সাতক্ষীরা জেলাকে সমৃদ্ধ করেছে। রয়েছে পুরোনো অনেক স্থাপনা। যদিও খুব অল্পই টিকে রয়েছে। ২০১৮ সালে আবিষ্কৃত হয়েছে দেড় হাজার বছরের পুরোনো একটি বৌদ্ধমন্দির। মোগল স্থাপনা হিসেবে মসজিদ ছাড়াও আছে দুটি হাম্মামখানা।
আমি প্রথম সাতক্ষীরা জেলা ভ্রমণ করি ২০১৯ সালে। বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রথম পরিভ্রমণে একটি অঞ্চলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক চোখে পড়ে না। সেগুলোই দেখবার জন্য দ্বিতীয়বার পরিভ্রমণ করি ২০২০ সালে। একটি অস্থির সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সেপ্টেম্বর মাসে সাতক্ষীরায় যাই। দ্বিতীয় পরিভ্রমণে সাতক্ষীরা জেলা আমার কাছে নতুন রূপে ধরা দিয়েছে। আমি কোনো গবেষক বা ইতিহাসবিদ নই, তবে কোনো অঞ্চল ভ্রমণ করার সময় সেই অঞ্চলের প্রাচীন ইতিহাস আর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো ঘুরে দেখতেই বেশি পছন্দ করি আমি।
বাংলাদেশের হেরিটেজ জোন কোনটি, এই প্রশ্ন করবার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় সবাই বলবেন—উত্তরবঙ্গ। এটি একটি সঠিক তথ্য, কিন্তু দক্ষিণ বাংলারও রয়েছে সুপ্রাচীন ইতিহাস। হেরিটেজ অঞ্চল হিসেবে বৃহত্তর খুলনা-যশোর নিয়ে হয়েছে নানা গবেষণা, ইতিহাসবিদেরা রচনা করেছেন নানা বই ও প্রবন্ধ। কিন্তু আলাদা করে সাতক্ষীরার প্রত্নতত্ত্ব ও ইতিহাস নিয়ে সে রকম আলাপ চোখে পড়েনি বা ভ্রমণের নিমিত্তে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো দেখবার জন্য সাতক্ষীরার কথা বলা হয় না।
সাতক্ষীরাতে উপজেলার সংখ্যা ৭, সৌভাগ্যক্রমে আমি প্রতিটি উপজেলা ভ্রমণ করেছি। প্রতিটি উপজেলায় রয়েছে নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন। তবে একথাও সত্যি, কিছু কিছু স্থাপনার অবস্থা খুবই শোচনীয়, রয়েছে পরিত্যক্ত অবস্থায়, বলা যায় একেবারেই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। সব কটি প্রত্নস্থল ভ্রমণের গল্প এখন করছি না, বলছি বিশেষ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার কথা।
ঝুড়িঝাড়া ঢিবির উপরে লেখক © ছবি লেখকের সৌজন্যে
ঝুড়িঝাড়া ঢিবি
ঝুড়িঝাড়া ঢিবি! এই রকম ঢিবির সংখ্যা বাংলাদেশে অনেক। খননকালে প্রতিনিয়ত বেরিয়ে আসছে নতুন ইতিহাস। তেমনি সাতক্ষীরা জেলার এই ঝুড়িঝাড়া ঢিবি আসলে প্রায় দেড় হাজার বছরের পুরোনো এক বৌদ্ধমন্দির! সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার আগৈলঝড়া গ্রামের সেই ঝুড়িঝাড়া ঢিবি নিয়ে আছে কতই না উপকথা। কেউ কেউ এটাকে জিনের ঢিবিও বলতেন। সবকিছুর অবসান ঘটেছে ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর।
প্রায় তিন মাস খননকাজ চালিয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সন্ধান পায় এই মধ্যযুগের স্থাপনার। খননকাজে এখানে পাওয়া যায় ইট নির্মিত একটি বৌদ্ধমন্দিরের ধ্বংসাবশেষ, মাটির পাত্রের ভগ্নাংশ, গুটিকা, কাচের গুটিকা, অলংকৃত ইট, পোড়ামাটির খেলনা, ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলের খেলনা। মাটির পাত্রের মধ্যে সুলতানি আমলের প্লেট, বাটিপান পাত্র, নলযুক্ত পাত্র। এখানে প্রায় অর্ধ একর জায়গা খনন করা হয়। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের একজন কেয়ারটেকার রয়েছেন স্থানটিতে। নতুন আবিষ্কৃত হওয়া এই প্রত্নস্থানের আরও যত্ন, সংরক্ষণ আর প্রচার প্রসারণা প্রয়োজন। এখানে প্রাপ্ত মৃৎপাত্রের সঙ্গে ভরতভায়না ও মহাস্থানগড়ে প্রাপ্ত মৃৎপাত্রের সাদৃশ্য রয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকা অনুসারে, গোটা সাতক্ষীরায় প্রত্নস্থান রয়েছে ১৪টি, এশিয়াটিক সোসাইটির প্রকাশিত ড. মিজানুর রহমান সাতক্ষীরায় খুঁজে পেয়েছেন ১৮টি প্রত্নস্থল।
শ্যাম নগরের ঈশ্বরীপুর হাম্মামখানা © এলিজা বিনতে এলাহী
মোগল স্থাপনা হাম্মামখানা
হাম্মামখানা! আমাদের কাছে খুব পরিচিত শব্দ নয়। এর অর্থ স্নানাগার বা গোসলঘর। হাম্মামের ধারণা রোমানদের কাছ থেকে মুসলমানরা গ্রহণ করে। মধ্যযুগে বিভিন্ন স্থানে নির্মিত হাম্মামের যে পরিচয় পাওয়া যায়, তাতে প্রকার ও আকারের ভিন্নতার পরিচয় মেলে। মসজিদ কিংবা সরাইখানার সঙ্গে হাম্মামখানা সংযুক্ত থাকত। ইতিহাসে উল্লেখ আছে, বাদশাহ জাহাঙ্গীর তাঁর হাম্মামখানায় দরবার বসাতেন। সে থেকেই বোঝা যাচ্ছে, হাম্মামখানার আয়তন বা আকৃতি কী রকম সুবিশাল ছিল। হাম্মামের বিভিন্ন অংশ ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতো—কফি পান, বিশ্রাম, শৌচকার্য, নামাজ ইত্যাদি। উপমহাদেশে অধিকাংশ হাম্মামখানা আমির-ওমরাহ ও রাজপরিবারের সদস্যরাই ব্যবহার করতেন। আরেকটি কথা বলবার লোভ সামলাতে পারছি না, বাংলাদেশে সব কটি হাম্মামখানায় আমি ভ্রমণ করেছি। গোটা বাংলাদেশে মোগল আমলের ৭টি হাম্মামখানা টিকে আছে বিভিন্ন জেলায়। সাতক্ষীরায় রয়েছে দুটি। সাতক্ষীরার হাম্মামখানা দুটি শ্যামনগর উপজেলায় অবস্থিত। একটি জাহাজঘাটাতে, অন্যটি ঈশ্বরীপুরে। শ্যামনগর সাতক্ষীরা জেলা সদর থেকে ৭৫ কিলোমিটার দূরে।
শ্যামনগরে জাহাজঘাটা নামক স্থানে যে হাম্মামখানাটি রয়েছে, বাইরের অবয়ব দেখে বোঝার উপায় নেই, সেখানে একটি হাম্মামখানা রয়েছে। কারণ, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এখানে সংস্কারকাজ করেছে। সংস্কারকাজ করতে গিয়ে আধুনিক ইট দিয়ে এমনভাবে বাইরের ইমারতটি বানানো হয়েছে, যা দেখতে সাধারণ একটি স্থাপনার মতো মনে হয়। ধীরে ধীরে ভেতরে প্রবেশ করলে হাম্মামখানার ধ্বংসাবশেষ চোখে পড়ে। বর্তমানে ৪টি কক্ষ টিকে আছে ভেতরের দিকে কক্ষটির ছাদ অর্ধনলাকার পদ্ধতিতে নির্মিত এবং দুপাশে দুটি ছিদ্র। এই কক্ষে ২টি চৌবাচ্চা এবং চৌবাচ্চার ওপরে দুটি গোলাকার ছিদ্র। দুপাশের দেয়ালে খিলানের নকশা আছে।
এই ইমারত দ্বিতল ছিল বলে শ্রী সতীশ চন্দ্র মিত্র বৃহত্তর যশোহর- খুলনার ইতিহাস বইয়ে উল্লেখ করেছেন। ওপরে বাসগৃহ ও নিচে হাম্মামখানা। কিন্তু প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটাকে একতলা একটি হাম্মামখানা বলে উল্লেখ করেছে।
ড্যামরাইল নবরত্ন মন্দির © এলিজা বিনতে এলাহী
ড্যামরাইল নবরত্ন মন্দির
ড্যামরাইল নবরত্ন মন্দির সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায়। সাতক্ষীরা জেলা শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে কালীগঞ্জ উপজেলা। জেলা শহর থেকে সরাসরি বাস সার্ভিস আছে, আছে মাহিন্দ্র, অটোরিকশা। তবে বাসে করেই যাওয়া নিরাপদ, সময়ও কম লাগবে। কালীগঞ্জের প্রত্নস্থলগুলো দেখার জন্য খুবই সহজ মনে হয়েছে সেখানকার বাইক সার্ভিসের সহায়তা নেওয়া। কারণ, ড্যামরাইল নবরত্ন মন্দির দেখবার জন্য বাইকই একমাত্র বাহন মন্দিরের কাছাকাছি যাবার জন্য।
কালীগঞ্জের মোস্তফাপুর গ্রামে এই মন্দিরের অবস্থান। মোস্তফাপুর গ্রামটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের একটি গ্রাম। আমার বাইকচালক বলছিলেন, ‘ওই যে দেখুন আপা, ভারত দেখা যাচ্ছে।’ গ্রামে লোকবসতি আমার কাছে বেশ কম মনে হলো। মন্দিরের কাছাকাছি যাবার কোনো রাস্তা নেই। একটি নির্দিষ্ট স্থান পর্যন্ত বাইক রেখে তারপর প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে যেতে হবে, সেটিও আবার চিংড়িঘেরের আল ধরে ধরে। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, একটি দ্বীপের মাঝে একটি স্থাপনা দণ্ডায়মান। ২০২০ সালে যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে এটি যখন নির্মাণ করা হয়েছিল, তখন এই অঞ্চলের ভৌগোলিক অবস্থান কেমন ছিল! এই রকম চিন্তা করতে করতে এগোচ্ছিলাম মন্দির দর্শনে।
গবেষক আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া তাঁর বইতে উল্লেখ করেছেন, নব্বইয়ের দশকে তিনি হাঁটু অবধি পানি, কাদা পেরিয়ে মন্দিরের দেখা পেয়েছেন। মিজানুর রহমান ২০০০ সালে প্রায় একই রকম অবস্থা পেয়েছেন। এই মন্দির নিয়ে প্রচলিত রয়েছে নানা কথা ও উপকথা। তবে গবেষকদের তথ্যগুলো আগে শেয়ার করে তারপর বলছি সেখানকার স্থানীয়দের কথা।
জানা যায়, রাজা বিক্রমাদিত্য নয়জন গুনীন ব্যক্তি নিয়ে একটি দল গঠন করে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সিদ্ধান্ত নিতেন। নয়জন সভাসদ নিয়ে এই মন্দিরে মিলিত হতেন বলে এটির নাম নবরত্ন মন্দির হয়েছে। এই বিষয়ে গবেষক সতীশ চন্দ্র মিত্র বলেছেন, ‘এখানে বিক্রমাদিত্যের নবরত্ন সভা বসিত, সমাজের মিলন হইত, তাহাতে সামাজিক বিধি নিষেধ লিপিবদ্ধ হয়ে থাকিত।’ মিজানুর রহমান তাঁর বর্ননায় একটি সরকারি রিপোর্টের কথা উল্লেখ করেছেন, সেখানে এই মন্দিরকে কোনো ধর্মীয় মন্দির বলা হয়নি। এই মন্দিরকে বলা হয়েছে সামাজিক মন্দির।
সামাজিক মন্দিরের বিষয়টি গবেষকেরা নাকচ করে দিয়েছেন এই মন্দিরের আকার-আকৃতি দেখে। বইতে পড়েছি, মন্দিরের পশ্চিম দিকের দেয়ালে ইষ্টকলিপিতে তার প্রতিষ্ঠাকাল আর যিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন, সেটি লেখা ছিল। সেই দেয়ালে, খুব খেয়াল করলে আজও সেই ইষ্টকলিপি চোখে পড়ে। তবে তা এতটাই ম্রিয়মাণ যে ক্যামেরায় ধারণ করা সম্ভব হয়নি। ইতিহাসবিদেরা ইষ্টকলিপির পাঠ উদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছেন। সেখান থেকেই জানা যায়, এর নির্মাণকাল ১৫৮২ খ্রিস্টাব্দ। আর নির্মাণ করেছেন রাজা বিক্রমাদিত্য।
চিংড়িঘের ধরে যেতে যেতে পেছন থেকে এক নারীকণ্ঠ বলে উঠল, ‘ও দিদি, কই গেছিলা?’ আমি মন্দির দর্শনের কথা বললাম। সঙ্গে সঙ্গে উনি বললেন, ‘এই মন্দির এক রাতে হয়েছে। এই অঞ্চলের কোনো কোনো তরুণ এই মন্দিরের ওপরে উঠেছিল, সবাই এখন পাগল হয়ে গেছে। তাই আমরা এই মন্দিরের কাছাকাছি যাই না। উনি বললেন, আরও ৪/৫টি মন্দির ছিল, সব ভেঙে গেছে। আর কয়েক বছর পর নবরত্ন মন্দিরের কতটুকু অংশ অক্ষত থাকবে বলা মুশকিল। তবে প্রাচীন এই মন্দির সংরক্ষণ করা খুবই প্রয়োজন। চারদিকে চিংড়িঘেরের লবণ পানি মন্দিরের ক্ষতি করছে আরও দ্রুততার সঙ্গে। কিছুদিন পর হয়তো সেখানে যাবার পথটুকুও থাকবে না। তখন আসলে দুই কিলোমিটার দূর থেকে নবরত্ন মন্দির দর্শন করে ফিরে যেতে হবে। এই অঞ্চল একসময় ধামরাইল পরগনার অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেই জন্যই এই মন্দিরকে ড্যামরাইল নবরত্ন মন্দির বলা হয়। ধামরাইল কালক্রমে অপভ্রংশ হয়ে ড্যামরাইল হয়েছে।
প্রবাজ পুর মসজিদের টেরা কোটার কাজ @ এলিজা বিনতে এলাহী
জোড়া শিবমন্দির
ফকির চাঁদ ঘোষ নির্মিত জোড়া শিবমন্দির সাতক্ষীরা জেলা শহর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার গেলেই ছয়ঘরিয়াতে দুটি শিবমন্দির ক্ষত-বিক্ষত শরীর নিয়ে দণ্ডায়মান এখনো। মন্দির দুটোর বিশেষত্ব হলো, দেয়ালের গায়ে ফুল, লতাপাতা, বাদক, অশ্বারোহী, দেব-দেবীর চিত্রসংবলিত। ফকির চাঁদ ঘোষ ছিলেন জাতিদার। জাতিদার কী? জমিদারের অধীনস্থ বিশেষ ব্যক্তিদের বলা হয় জাতিদার। সাতক্ষীরার জমিদার প্রাননাথ রায়ের জাতিদার ছিলেন ফকির চাঁদ ঘোষ। কে বা কারা এটি সংস্কারপূর্বক মন্দিরের গায়ে টাইলস ব্যবহার করেছেন জানা নেই। চারদিকে বরাবরের মতো স্থাপনা রয়েছে মানুষ বসবাসের। দুই মন্দিরের মাঝের অংশেও কিছু একটা নির্মাণ করা হচ্ছে। নতুন করে বলবার কিছুই নেই বর্তমান অবস্থা দেখে।
কোঠাবাড়ি থান
কোঠাবাড়ি থান নাম শুনে মনে হয়, এ আবার কী? সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কোঠাবাড়ি নামক স্থানে একটি ভাঙা দেয়ালের অল্প কিছু অংশ বটগাছকে কেন্দ্র করে টিকে আছে। এর উৎপত্তি ও ইতিহাস পুরোই মিলিয়ে গেছে। মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময়ে নির্মিত একটি দুর্গ ছিল এই অঞ্চলে। সেই দুর্গেরই মাত্র একটি অংশ টিকে আছে। পুরো জায়গাটি একসময় জঙ্গলে ঢেকে যায়। তারপর ধীরে ধীরে এখানে লোকবসতি শুরু হলে দেয়ালের বেশ কিছু অংশ আবিষ্কৃত হয়। কিন্তু বটগাছ নিয়ে যে অংশটি পাওয়া যায়, সেটি নিয়ে নানা কল্পকাহিনি শুরু হতে থাকে। সেখানে এখন প্রতি শুক্রবার মানতমেলা বসে। লোকজন এসে মানত করেন। চারদিকে গেটের মতো যে দেয়ালগুলো ছিল, সেগুলো নেই আর। শুধু বটগাছের অংশটি টিকে আছে। সেখানে বিভিন্ন রঙের সুতা ঝুলছে, ইট-গাছের ফাঁকে ফাঁকে তুলে রেখেছে কেউ কেউ কোনো ইচ্ছেপূরণের উদ্দেশ্যে। সেই চত্বরে তিনটি পাথরখণ্ড পড়ে আছে। এলাকাবাসী বলল, ৬টি ছিল। ৩টি বিশেষজনেরা নিয়ে গেছেন! এদিকে তেমন কেউ আসেন না, মানে পর্যটকেরা একেবারেই আসেন না। দেয়ালের অই অংশটুকুও হয়তো টিকে থাকত না, যদি না সেখানে মানতমেলা বসত। লালসালুর অবস্থা এখনো সমাজে বিদ্যমান।
শ্যামসুন্দর মন্দির
শ্যামসুন্দর মন্দির! সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া গ্রামের শ্যামসুন্দর মন্দির। তিনতলা মন্দিরটি ষোলো শতকের স্থাপত্যশৈলীর এক অপূর্ব নিদর্শন। এই মন্দিরের গায়ে ইষ্টকলিপি থেকে জানা গেছে এর নির্মাণকাল। তবে শ্যামসুন্দর মন্দির সম্পর্কে আরও একটি ধারণা পোষণ করেন ইতিহাসবিদেরা, মন্দির নির্মাণের আগে এখানে একটি বৌদ্ধ মঠ ছিল। সেই জন্য স্থানীয়ভাবে এই মন্দিরকে মঠবাড়ি বলা হয়। মন্দিরের গায়ে একসময় প্রচুর টেরাকোটার কাজ ছিল। তবে এর ছিটেফোঁটা রয়েছে কেবল। কে বা কাহারা খুবই সুনিপুণভাবে সেগুলো খুলে নিয়েছেন! যদিও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের বোর্ড ঝুলছে।
দরবার স্তম্ভের গায়ে লাগানো ফলক @ এলিজা বিনতে এলাহী
দরবার স্তম্ভ
সেখানকার স্থানীয়জনদের আমি যখন জিজ্ঞেস করছিলাম দরবার স্তম্ভের কথা, কেউ চিনতে পারছিল না। কারণটা বুঝতে পারলাম যখন স্তম্ভটি খুঁজে পেলাম। কোনোমতে দাঁড়িয়ে আছে স্তম্ভটি, চারদিকে দোকানপাট, স্তম্ভের নিচে রাখা হয়েছে আশপাশের দোকানের মালপত্র, সাইকেল আরও নানা আবর্জনা, দুর্গন্ধও নাকে বাজল। যদিও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটাকে পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করেছে। একসময় নাকি স্তম্ভটি ভেঙে ফেলার উপক্রম হয়েছিল। আমাদের হাতে ক্যামেরা, ভিডিও দেখে কিছু লোক মালপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছিল।
তালা থানার তালা বাজারে দরবার স্তম্ভ নামে যে স্তম্ভ আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে বঙ্গভঙ্গ রোধের ইতিহাস। ভারতবর্ষ যখন ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করেছে, তখন ১৯০৫ সালে দুই বাংলাকে বিভক্ত করার ঘোষণা দেয়, যা বঙ্গভঙ্গ নামে পরিচিত। পরে আন্দোলন আরও জোরদার হলে বঙ্গভঙ্গ রদ ঘোষণা করতে বাধ্য হয় ব্রিটিশ শাসকেরা। ১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর বঙ্গভঙ্গ রদের ঘোষণা এলে তা উদ্যাপনে এই স্তম্ভ স্থাপন করে তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী সংগঠক ও রাজনীতিক রাজকুমার বসু। পরবর্তীকালে দরবার স্তম্ভ সংলগ্ন স্থানে বছরে একবার মেলা বসত। এ মেলার নাম ছিল দরবার মেলা। ধীরে ধীরে এখানে বাজার বসতে থাকে। তা তালা মেলা ধীরে ধীরে স্থায়ী বাজারে পরিণত হয়। ক্রমে ইতিহাস চাপা পড়ছে কালের ঘনঘটায়। কতকাল বাজারের সঙ্গে যুদ্ধ করে দরবার স্তম্ভ টিকে থাকবে জানি না।
তেতুলিয়া শাহী মসজিদ [ ভাঙা মসজিদ ]
তেঁতুলিয়া গ্রামটি উপজেলা সদরের ৩ কিলোমিটার উত্তরে। এই গ্রামে ১০০ গজের মধ্যে ‘তেঁতুলিয়া শাহী মসজিদ’ ও ‘তেঁতুলিয়া জামে মসজিদ’ নামে দুটো ঐতিহাসিক মসজিদ আছে। তেতুঁলিয়া গ্রামে মোগল আমলের এই মসজিদকে স্থানীয়ভাবে ভাঙা মসজিদ বলা হয়। সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময়ে এটি নির্মাণ করা হয়। তবে মসজিদটি খুবই শোচনীয় অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু মসজিদটি এখনো ব্যবহার করা হচ্ছে বলে আমার মনে হলো। কারণ, বিকেলে আসর নামাজের আগে সেখানে মুসল্লিদের ইসলামিক আলোচনা হচ্ছিল।
তেঁতুলিয়া জামে মসজিদ @ এলিজা বিনতে এলাহী
তেঁতুলিয়া জামে মসজিদ
তেঁতুলিয়া জামে মসজিদটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংস্কারের ফলে অনেকটা ভালো অবস্থায় টিকে আছে। জানা যায়, জমিদার সালামতুল্লাহ খান মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন কলকাতার ‘সিন্দুরে পট্টি’ মসজিদের আদলে, এই তথ্য রয়েছে সরকারি তথ্য বাতায়নে। ছয় গম্বুজের এই মসজিদের মিনার সংখ্যা ২০। সুউচ্চ এ মিনারগুলো বহুদূর থেকে নজরে পড়ে।
১৮ শতকের প্রথম দিকে মোগল আমলে তেঁতুলিয়া গ্রামে তৎকালীন মুসলিম ধার্মিক জমিদার কাজী সালামতুল্লাহ এটির নির্মাণ করেছিলেন। মসজিদটির উত্তর পার্শ্বে রয়েছে বিশাল একটি দীঘি। মসজিদ থেকে সিঁড়ি গিয়ে মিশেছে দীঘির তলদেশে এবং মসজিদটির চারপাশ ঘিরে ৪ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট সীমানাপ্রাচীর। কাজী সালামতুল্লাহর বংশধর লন্ডনপ্রবাসী মন্টি সিদ্দিকীর লাগানো একটি প্লেটে উল্লেখ রয়েছে, মসজিদটি তেঁতুলিয়া শাহী জামে মসজিদ নামে পরিচিত, ১৮৫৮-৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা খান বাহাদুর মৌলভী সালামতুল্লাহ। যা মোগল মনুমেন্টস অব বাংলাদেশ নামক গ্রন্থে প্রকাশিত তথ্যে প্রমাণিত।
প্রবাজপুর শাহী জামে মসজিদ
প্রবাজপুর শাহী মসজিদ সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার প্রবাজপুর গ্রামের নামেই নামকরণ। স্থাপত্যশৈলী এবং দেয়ালের গায়ে পোড়ামাটির নকশা দেখে এটাকে কোনো কোনো গবেষক সুলতানি আমলের বলে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এই মসজিদের সম্পত্তি-সম্পর্কিত একটি মামলা হয় খুলনা জজকোর্টে। তখন মসজিদপক্ষের লোকজন এর আদি দলিল ও ফরমাননামা উদ্ধার করেন। তা থেকে জানা যায়, এই মসজিদের নির্মাণকাল ১৬৯৩ খ্রিস্টাব্দ এবং সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময়ে নির্মিত। উনিশ শতকের শেষ দিকে প্রবাজপুর বসতিহীন হয়ে পড়লে, মসজিদটিও ঢাকা পড়ে যায় জঙ্গলে। ১৯৬৫ সালে জঙ্গল পরিষ্কার করতে গিয়ে এর দেখা মেলে। দৃষ্টিনন্দন প্রবাজপুর মসজিদ শুধু সাতক্ষীরার গর্ব নয়, গোটা বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাসের কথা বলে এই মসজিদ।
বনবিবি বটতলা
গোটা বাংলাদেশে অনেক শতবর্ষী গাছ দেখেছি। এই গাছগুলো সম্পর্কে প্রচলিত অনেক মুখরোচক গল্প আছে। সাতক্ষীরার এই বটবৃক্ষও তার ব্যতিক্রম নয়। দেবহাটা উপজেলার ‘বনবিবি বটতলা’ দেবহাটা উপজেলার একটি ঐতিহাসিক স্থান। প্রায় ৪ একর জমির ওপর বিস্তৃত এই বটতলা। বটগাছের শাখা-প্রশাখা থেকে মাটির সঙ্গে শিকড় তৈরি করে এটি বিস্তৃতি লাভ করেছে।
বহু পুরাতন এই বটতলায় সাধু-ঋষিদের ধ্যানের স্থান ছিল। এখানে বিভিন্ন দেবদেবীর পূজা-অর্চনা করা হতো। হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালিত হতো। কথিত আছে, কারও মনোকামনা পূর্ণের জন্য এখানে এসে বনবিবির স্মরণ করলে এবং তার কাছে চাইলে মনের আশা পূরণ হতো। বর্তমানে এখানে আর সাধু ঋষিদের ধ্যান করতে দেখা যায় না। তবে এখন এটি পর্যটন কেন্দ্র। উপজেলা পরিষদ থেকে স্থানটি মাত্র কয়েক মিনিটের পথ। উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে প্রতিবছর এই বটতলায় পয়লা বৈশাখ অনুষ্ঠানটি উদ্যাপিত হয়। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পান্তা ইলিশ খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। স্থানটির চারপাশে এখন বসতি গড়ে উঠেছে। তাই ধীরে ধীরে এই বটতলা তার নিজস্ব স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলছে বলে স্থানীয়রা জানান।
বনবিবির শাখা প্রশাখা @ এলিজা বিনতে এলাহী
টাউন শ্রীপুর
টাউন শ্রীপুর অর্থ কি রূপবতী শহর! একেবারে ইছামতীর পাড়ে গড়ে ওঠা সাতরীক্ষার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী উপজেলা দেবহাটা। সেখানকার এক রূপবতী শহর টাউন শ্রীপুর। আজ এর নামকরণ এমন হয়নি, প্রায় সেই ১৫০ বছর আগ থেকেই। খুলনা বিভাগের প্রথম পৌরসভা নাকি টাউন শ্রীপুরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রথমে এটি গ্রাম ছিল। এখানে বসবাস করতেন ১৩ জন প্রভাবশালী জাতিদার। তাদের চেষ্টাতেই শ্রীপুর গ্রাম হয়ে ওঠে টাউন শ্রীপুর। পুরো টাউন শ্রীপুরে এখনো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে সেই সব জাতিদারের বাড়িঘরের ভাঙাচোরা অংশ। পৌরসভার প্রবেশ ফটকের দেয়ালে ইংরেজি ফলক এখনো অক্ষত আছে। সেখান থেকেই পৌরসভার নির্মাণকাল জানা যায় ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দ। পৌরসভা গঠিত হবার পর এই গ্রামের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়। সে সময় রাস্তার দুধারে গ্যাসের ল্যাম্পপোস্ট ছিল। সন্ধ্যা হলেই ঝলমল করে উঠত টাউন শ্রীপুর। এমনটাই বলছেন, সেই অঞ্চলের প্রৌঢ়রা। ১৯৫৩ সালের দিকে দেবহাটা পৌরসভার মর্যাদা হারায়। ১৯৫৫ সালে একে রূপ দেওয়া হয় ইউনিয়ন পরিষদে। ধীরে ধীরে শ্রী হারায় টাউন শ্রীপুর আর দেবহাটা।
সাতক্ষীরার টুকিটাকি
একটি অঞ্চল পরিভ্রমণে পথে যেতে যেতে ছোট ছোট কিছু বিষয় চোখে পড়ে। ছোট ছোট ঘটনাগুলো সেই অঞ্চলের স্বাতন্ত্র্যকে ফুটিয়ে তোলে। সেগুলো আমি দারুণ উপভোগ করি। এই রকম ছোট দু-একটি বিষয় উল্লেখ করছি। সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলায় গণপরিবহন হিসেবে ছই দেওয়া রিকশা ভ্যানের প্রচলন বেশ। এই অঞ্চলে লোকসমাগম আমার কাছে একটু কম বলে মনে হলো। ভাত খাবার হোটেল খুঁজছিলাম দুপুরে কিন্তু পাইনি। বাজারে দাঁড়িয়ে মিষ্টি আর পানি খেয়েছি। প্রবাজপুর থেকে মোস্তফাপুর বাজারে যাবার সময়।
মেয়েরা দুই চাকার বাহন ব্যবহার ক্রমেই বেড়ে চলেছে আমাদের দেশে। ছোট ছোট শহর অঞ্চল এর ব্যতিক্রম নয়। উত্তরাঞ্চলে এই দৃশ্য চোখে পড়ে হরহামেশাই। এমনকি, আমি ২০০৫ সালে উত্তরবঙ্গে গিয়ে এই ধরনের দৃশ্য দেখেছি। কিন্তু দক্ষিণ অঞ্চলে কম চোখে পড়ে। টাউন শ্রীপুরে দেখলাম সাইকেলের ব্যাপক ব্যবহার। খুব ভালো লেগেছে বিষয়টি।
সাতক্ষীরা সম্পর্কে আরেকটি কথা না বললেই নয়, ইতিহাস-ঐতিহ্যের পাশাপাশি সাতক্ষীরার স্বকীয়তা প্রকাশ পায় সাতটি জিনিসের মাধ্যমে, সেগুলো হলো কুল, ওল, আম, ঘোল, সন্দেশ, মাদুর ও গাছের কলাম। সাতক্ষীরাবাসী খুব গর্ব করে বলে ‘সাতক্ষীরার সাত’-এর কথা। বাংলাদেশের অন্যতম হেরিটেজ জোন সাতক্ষীরা। একথা বললে নিশ্চয়ই অত্যুক্তি হবে না! আমি জানি, আমার মতো অনেকেই এখন সাতক্ষীরার প্রেমে পড়েছেন। নিজের প্রেমটা একবার যাচাই করে আসতেই পারেন।
সহায়িকা
১. বাংলাদেশের প্রত্নসম্পদ: আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া, দিব্য প্রকাশ [১৯৮৪], ঢাকা
২. সাতক্ষীরার পুরাকীর্তি: মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি [২০০৮], ঢাকা
৩. বৃহত্তর যশোহর-খুলনার ইতিহাস ১ম খণ্ড [১৯১৪] ও ২য় খণ্ড [১৯২২]: সতীশ চন্দ্র মিত্র, দে’জ সংস্করণ [২০০১], কলকাতা
ঈশ্বরীপুর এ একটি প্রাচীন মন্দির আছে, যশোরেশ্বরী মন্দির, হিন্দুদের মতে এটি তীর্থ স্হান, রাজা বিক্্রমাদিতের সময়কার, আপনার লেখা খুব ভালো লাগলো, ধন্যবাদ, ভালো থাকুন সবসময়।
বিনোদ কুমার আতরওয়াল,
জুলাই ০৫, ২০২২ ১২:২৯