মায়ের কাছে প্রার্থনা ও অন্যান্য কবিতা

 

আমাদের স্বাধীনতা

খাও
দেহযন্ত্র সতেজ রাখো
তারপর নিজের রেপ্লিকা তৈরি করে
বিদায় নাও সময় হলে—
সামান্য এই তিনটা কাজই পৃথিবী আমাদের দিয়েছিল
আর আমরা তাদের আরো নিখুঁত
আরো যথার্থ করতে
কাজগুলিকে ভেঙে টুকরা টুকরা করে
ডিটেইলের জগতে ঢুকে পড়েছি
এখন বাইরে বেরিয়ে যে নিজের সমগ্রতার দিকে তাকাবো
তা আর পারছি কই
আমরাতো পথই জানি না
তারপরও আমরা প্রতিদিনই খাই
ব্যায়াম করি আর সন্তানের জন্ম দেই
এবং সময় হলে কবরে পালাই
আর সবকিছুই করি অভ্যাস নামের
এক ইলাস্ট্রেটরের জাদুতে
আমাদের স্বাধীনতা এইটুকুই


রুটিন

রুটিন একটা বিরাট মাকড়শার মতো
তার জালে বেঁধে ফেলেছে আমাদের জীবন মন
ফলে এখন আমরা সূর্যের মতো ঘুরেই যাচ্ছি ঘুরেই যাচ্ছি প্রতিদিন
ক্লান্তি অবসাদ ঘাম সব তুচ্ছ করে
আর আমাদের সর্বস্ব দিয়ে জ্বালানো আলোতে আলোকিত হচ্ছে
আমাদের চারপাশ ঘিরে থাকা প্রহ উপপ্রহের মাটি
রুটিন একটা বিরাট মাকড়শার মতো
গুটি গুটি পায়ে এগোচ্ছে আমাদের কীটজীবন খেতে


নির্মাণ শ্রমিক

বিজ্ঞান আমাকে ঘরছাড়া করেছে
নিয়ে গেছে এমন জায়গায়—যেখানে আমি কিছুই না
আবার এমন কিছু—যাকে ছাড়া সমস্ত বস্তুজগত
আত্মজীবনীহীন বোবা
বিজ্ঞান আমাকে আকাশ দিয়েছে
অথচ পৃথিবী নামের একটা শ্যাওলা পড়া পাথরের টুকরার অন্ধকার খাঁজে
আমি একটা কীট হয়েই তো ছিলাম
এখন দায়িত্বই আমার মুক্তি
নির্মাণ শ্রমিকের কাজ আমার একমাত্র পেশা


মায়ের কাছে প্রার্থনা

গরমে ঔদ্ধত্যে আমরা সমানে পচে যাচ্ছি মা
আমাদের হাড় থেকে মাংস আলাদা হয়ে যাচ্ছে
হৃদয় থেকে খসে পড়ছে ভাবনা আর
যৌনতা থেকে প্রেম
আমাদের পচা গন্ধে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে আকাশ বাতাস
আমাদের রক্ষা করো সেলোফেন পেপারে মুড়ে
ডিপ ফ্রিজের অভ্যন্তরে রেখে—
আমাদের সকল প্রার্থনা এখন টাটকা হবার
আমরা শিশুর মতো কাঁদছি