হালকা রোদের দুপুর
২৫
একলা ছিল নরম রোদের দিন। কোত্থেকে তার বন্ধু হলো গাছ, বন্ধ হলো ঘুম! অনেক উপদ্রব ছিলো বিকেলের ছোট বোন, বসন্তের ঐপারে। শহরের কোলে পাথরকুচি এক, নিতান্তই অবহেলায় ঝরে। অবাক আমার বিব্রত এই চোখে, উজ্জ্বল হাঁস পালক ভেজায় সুখে। বাচ্চাগুলো খরগোশছানা হয়ে এদিক-ওদিক বরফ ছুড়ে মারে, বৃষ্টিরাগে জানলা খোলা মোজার্টের ঐপারে। আস্তে—ওই রূপ আসে ব্যাপক সুন্দর, বিপুল কান্না হয়ে। আনন্দের শয্যাপাশে গেঁথে রাখে যিশুর ক্রন্দন।
২৬
কে তুমি রবির স্বপ্নে ঢুকে হরণ করো ঘুম? করো বিবিধ আস্ফালন? রাতজাগা শেষে বরং আমার সঙ্গে চলো। প্রেমটেম সব বোরিং ব্যাপার। ছেলেমেয়েগুলো যার-তার কাছে ভালোবাসা চায়! কণ্ঠ থেকে খুলে পড়ে কঙ্কাল, সে রূপ নয়নতারার মতো। আকস্মিক জেগে ওঠে সূর্যলতা ফুল, আকাশ দেখার ছলে, ছবির ছলনায়। অবাক পরিখা এত যে ডাকছ, গেলাম নাহয় তোমার কাছেই ধরো, ফিরবো কোথায়?
২৭
প্রতিবেশী আগুনের প্রতি অপার হয়ে বসে আছো। অনেক খেলার শেষে হেরে যাওয়া ট্রফিকে দিয়েছো গোপন উল্লাস। ধনুকের তার থেকে হারিয়ে ফেলেছো সুর, সঙ্গ ও সমূহ কম্পন। এসেছিলে একবার, আগুনের সমান বয়সী প্রেমনিবেদন নিয়ে। গিলে ফেল ব্যক্তিগত টেম্পারেচার। আকস্মিক জল আহামরি নয়। সকল রোদের ছটা প্রকাশ্যে আসেনি। মাঠে হাহাকার; খেলাধুলা নাই। আকাশগঙ্গায় তবু যুক্ত হচ্ছি বিবিধ খেলায়। বিহ্বল দুপুরে অট্টহাসি প্রসব করছে ওরা মজাদার রেসিপির ভেতর। আমি হারছি না, অন্য কেউ জিতে যাচ্ছে খুব।
২৮
শহুরে গানজুড়ে বেপথু অট্টহাসি, কালো মৌতাত, নিষ্ফলা স্বপ্নদৃশ্য। আর কী আছে ঝাঁঝালো সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায়? নিমোকহারাম মৃতদেহ থেকে খুলে রাখো রঙিন
ব্যাজগুলি, যা তারা লুট করেছে জাদুকরের মতো। কালো দস্তানায় বন্দি করো সমবেত আর্তনাদ; ফেলে আসা গিটারের কড আর এদিক-সেদিক পড়ে থাকা উপমাগুলো। মেলে ধরো আগমনীপথ। সকল সুসংবাদ ফিরে যাবে ঘরে, সাধারণ যৌনজীবনের কাছে। অসংখ্য বিভোর ক্ষতচিহ্নে রেখে হাত, মনে পড়বে গতজন্মের সন্ধ্যা, গভীর রাতে যাকে হারিয়ে ফেলেছিলে।
২৯
আমার পেয়েছে আনন্দ। দেখি সে তোমার মতোই ভালো। সারাদিনমান বিরক্ত করে না, সারা রাত্রি নির্ঘুম রাখে না, রোজ ঘন ঘন কাছেই ঘেঁষে না। আমার কতো না উল্লাস, জানে জতুগৃহ। ফিরিয়ে দিয়েছি কান্নার সংকেত। লালচোখ থেকে প্রতারণা খুলে নাও, দেখাও নিরং লাভা। তাকে তাকে সাজানো উদ্দাম নাচ—ননির সিম্ফনি! শোনা যায় দূরের হ্রেষা—ভূমিতে পাতো কান—শোন। পাহাড় ডিঙাতে আসছে ক্রুদ্ধ ঘোড়া, সেপ্টেম্বরে আর্তনাদের স্বরে।
অসাধারন কবিতা পড়লাম৷ দুর্দান্ত লাগলো৷ এই সিরিজটা বই প্রকাশ করুন কবি৷
পবিত্র মুখোপাধ্যায়
জুলাই ১৮, ২০২২ ১৬:৫৮
কবি সাম্য রাইয়ানের "হালকা রোদের দুপুর" ধরে আমি নাক বরাবর ঢুকে পড়লাম দিগন্ত প্রসারিত জনশূন্যে৷ ঘন ঘাসের জঙ্গল পেয়ে গেলাম, হাটলাম শুনলাং পদশব্দ বা ঘাসমাড়ানো খসখস—শুনছি, আমার পাঠকমনের তুলোট শরীরে বিঁধে যাচ্ছে তারই অভিজ্ঞতাগুলো—প্রেমকাঁটা। লাভ ইউ মাই ডিয়ার পোয়েট ????
মৌলিপ্রিয়া সরকার
জুলাই ১৮, ২০২২ ১৯:৫৯
আমি রিয়েলি ইমপ্রেসড সাম্য! আপনার এধরনের কবিতা আগে পড়িনি৷ আপনার নিজের ফর্ম এভাবে অকল্পনীয় ভঙ্গিতে চেইঞ্জ করে ফেলবেন রিয়েলি অবিশ্বাস্য৷ আই অ্যাম ভেরী এক্সাইটেড৷ আপনার হামিংবার্ড পড়েছিলাম৷ তার সাথে এই ৫টি মিলাতে পারছি না৷ পাঠমুগ্ধ ডিয়ার পোয়েট৷ টেক লাভ৷
আবির্ভাব সরকার
জুলাই ২১, ২০২২ ১৭:১৮
বাংলা কবিতা লিখতে যারা দুহাজার দশ পরবর্তী সময়ে এসেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী তরুণ সাম্য রাইয়ান তার বই 'হালকা রোদের দুপুর' সিরিজে গড়ে তুলতে চেয়েছেন একটা দৃঢ় ও তীব্র গতিময় অবস্থান৷ একজন কুশলী গায়ক যেন বিস্তারে ক্রমশঃ ব্যপ্ত হয়ে চলেছেন৷ শুভকামনা কবি সাম্য রাইয়ানের জন্য
সব্যসাচী মজুমদার
জুলাই ২৭, ২০২২ ১৪:১৯
নতুন ফর্মের কবিতা। পড়লাম অনেক ভাল লাগল
মোকলেছুর রহমান
জুলাই ০৪, ২০২২ ১৭:২২