নীরবতার আর্তনাদ ও অন্যান্য কবিতা

 

নীরবতার আর্তনাদ

আছি এক গোলকধাঁধায়।
হাসায়, কাঁদায়।
মন আছে, মুখ নেই।
চারপাশে নীরবতার আর্তনাদ।
পাতা ফাঁদ

একটাই সড়ক
নরক বরাবর।
যারা আপন
তারাই সবচেয়ে পর

আছে অসম্মান নির্যাতন
যূপকাষ্ঠ, বলি।
নির্বিকল্প পথ
ধেয়ে চলি

 

কাফনে আবৃত সব মানুষের আসা যাওয়া

বারান্দার গাছে কিছু ফুল ফুটে আছে।
গ্রীষ্মের দাবদাহ নেই, আছে শুধু বসন্তের হাওয়া।
অদূরে রাস্তা তাতে কাফনে আবৃত সব মানুষের আসা যাওয়া।
আর এই বিপ্রতীপতা
মর্মে গ্রন্থিত করে দিলো কিছু কথা

তাই ঘরে ফিরে আসি।
নতুন টাটকা দিন, তা-ও দেখি বাসি

স্নানঘরে দীর্ঘ স্নান
নেই তাতে কোনো পরিত্রাণ

পৃথিবীতে আসা আর যাওয়ার মাঝখানে
কে কী করি, কেন করি, সেসবের নেই কোনো মানে

 

দূরে যাইনি, কাছে আসিনি

আমরা জন্মাইনি এ পৃথিবীতে।
কোথাও তুমি নেই, কোথাও আমি নেই।
আমরা কোনোদিন জন্মাবো না।
তাই আমরা নৈকট্যে নেই, দূরত্বেও নেই

মুখোমুখি বসবার, পাশাপাশি হাঁটবার
টংঘরে চা বা রেস্তোরাঁয় কফি খাবার,
রাস্তা থেকে হঠাৎ বিদায় নেবার
রাত জেগে কথা বলবার, মান-অভিমান
বা প্রচণ্ড রেগে যাবার কোনো স্মৃতি নেই

আমরা কখনো দূরে যাইনি,
আমরা কখনো কাছে আসিনি

আমরা কোনোদিন জন্মাবো না
এই পৃথিবীতে

 

আমরা অমরালয়ে থাকি

তুমি আসো তুমি চলে যাও
এই শেষ দেখা বলে যাও।
শেষ বলে কিছু আছে নাকি?
আমরা অমরালয়ে থাকি

আমরা মরি না কোনো কালে
যদিও কুমির ঢোকে খালে
যদিও ডাঙায় আছে বাঘ
বাঘেদের ব্যাপক দেমাগ
তাদের ওপরে ওড়ে পাখি
আমরা অমরালয়ে থাকি

আলো আছে। আছে তমসাও
তখন তারকা হয়ে যাও!
এইসব ভেদ জানো না কি?
আমরা অমরালয়ে থাকি

 

কতোদিন যাই না টঙ ঘরে

কতোদিন যাই না টঙ ঘরে
দুপাশে টুল মাথার ওপর ছাউনি
যা পাওয়া যায়, সব খাওয়া যায়
মাঝেমধ্যে হয় বিনিময় চাউনি

গরুর দুধের চা হলে চাই সামান্যই চিনি
দোকানদার যা খেতে দেয় সবই খাওয়া চলে
ভাজা পোড়া খেলে কী হয়, একটিই তো দিন?
জীবন নিয়ে কত্তো খেলি আমরা ছিনিমিনি!

তুমি যদি বিদেশে যাও নিজের ডানায় উড়ে
হালকা মেঘের ওপারে তো নীলাভ আসমান
টঙ ঘর তো উবেই যাবে মুছে যাবে স্মৃতি
কাপ ও পিরিচ জানে কি আজ সম্পর্কের ইতি?

কতোদিন যাই না টঙ ঘরে
মহুয়া ফুল ফোটে এবং ঝরে