নাসির আলী মামুন
বাংলাদেশের খ্যাতিমান আলোকচিত্র শিল্পী নাসির আলী মামুন। তবে তিনি ‘ক্যামেরার কবি’ নামেই খ্যাত। বাংলা ভাষার আধুনিক কবি শামসুর রাহমান তাকে এই উপাধি দেন। মামুন শুধু ফটোগ্রাফির জন্য খ্যাতিমান তা নন, তিনি একাধারে আলোচিত-অনালোচিত লেখক, শিল্পী, কীর্তিমান ও অসংখ্য সাধারণ মানুষের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন। অবসরে তিনি চিত্রকলার চর্চা করেন। তাঁর জন্ম ১৯৫৩ সালে, পুরান ঢাকায়। পৈত্রিক বাড়ি ফরিদপুরে।
খুব ছোটবেলায় তিনি আলোকচিত্রের প্রতি অনুরাগী হন। প্রথম জীবনে স্থানীয় এক স্টুডিও থেকে ‘ধার করা’ ক্যামেরা দিয়ে মুখাবয়বের ছবি তোলেন। সাল ১৯৭২, সদ্য স্বাধীনোত্তর দেশ তখন। সেই থেকে শুরু হয় নাসির আলী মামুনের ‘পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফি’ বা ‘মুখাবয়বের ছবি’তোলার ইতিহাস। দেশে-বিদেশে অসংখ্য কীর্তিমান মানুষের ছবি তুলেছেন তিনি। একথা এখন সর্বজনবিদিত, তিনিই বাংলাদেশের পোর্ট্রেট ফটোগ্রাফির জনক।
অনুসন্ধানী মামুনকে বালকবেলায় মানুষের মুখাবয়ব বিষ্মিত করত। তিনি মানব চেহারার মধ্যে খুঁজতেন অন্য এক আলোকরূপের মানব চরিত্র। অন্যরূপ মানে আলোছায়ায় ব্যক্তির স্বরূপ ধরা। ছবির নানা ফর্মে কাজ করলেও দুই ধরনের শৈল্পিক কাজ তাঁকে কিংবদন্তীর খ্যাতি এনে দেয়। প্রথমত বিদ্যমান সমাজকাঠামোর নামজাদা কীর্তিমান ব্যক্তিত্বের মুখাবয়ব ক্যামেরায় ধারণ আর দ্বিতীয়ত ‘ঘর নাই’ মানুষের মুখ ক্যামেরা বন্দী করা।
নাসির আলী মামুন দেশে-বিদেশে সবমিলিয়ে ৬০-এর অধিক একক প্রদর্শনী করেছেন। সাক্ষাৎকার ও প্রবন্ধ মিলিয়ে মোট গ্রন্থ সংখ্যা ১৫। ফটোগ্রাফি নিয়ে বই লিখেছেন ৪ টি। শিল্পী জীবনে অসামান্য অবদানের জন্য নাসির আলী মামুন লাভ করেছেন ‘আজীবন সম্মাননা’ [ছবিমেলা: আন্তর্জাতিক ছবি প্রদর্শনী ২০১৭], ‘সেলেব্রেটিং লাইফ’ [স্টান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক ও ডেইলি স্টার ২০১৭], রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘শিল্পকলা পদক ২০১৭’ ও ‘মনজুর আলম বেগ পদক ২০২০’ [বেগ আর্ট ইন্সটিটিউট অব ফটোগ্রাফি]। বর্তমানে ‘ফটোজিয়াম’ নামে আলোকচিত্র সংগ্রহশালার জন্য কাজ করছেন তিনি।
নোট: তর্ক বাংলায় প্রদর্শনীতে প্রকাশিত ছবি বাণিজ্যিক উদ্দেশে স্বত্বাধিকারীর অনুমতি ব্যতিরেকে কেউ ব্যবহার করতে পারবেন না।