অমিতাভ পালের অপ্রকাশিত কবিতা
সামাজিক
সামাজিক চরিত্রগুলির আদর্শ সংলাপ ও স্ক্রিপ্ট
আমি প্রায়ই দেখি বিভিন্ন বাসায়
বাবা মা ভাই বোন স্বামী স্ত্রী—সকলেই মুখস্থ সংলাপ বলে যাচ্ছে
নাটকে নিজের নিজের সিনে
তারপর টানা বলে যাওয়ার আনন্দে মনে মনে নিজেকেই হাততালি দিয়ে
চেটে খাচ্ছে আত্মতৃপ্তির মধু
সামাজিক চরিত্রগুলির আদর্শ সংলাপ ও স্ক্রিপ্টের ফটোকপি
আজকাল যেকোন কোচিংয়ে পাওয়া যায়
আমাদের শুধু কিনে নিয়ে মুখস্থ করলেই হলো
তারপর পরিস্থিতি অনুযায়ী বলে যাওয়া
সামাজিক হওয়া আসলেই খুব সোজা
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ
রাত দশটা—ঈশ্বরের ডিনার শেষ
এখন স্বর্গের বারান্দায় দাঁড়িয়ে তিনি সিগারেট খাচ্ছেন
ঈশ্বরের শতমুখে জ্বলছে শতশত সিগারেট
আর রাতের কালো আকাশ ভরে মিটমিট করছে
তাদের আগুন
দিনে ঈশ্বর কিউবান সিগার খান
সূর্যটা যেন সেই সিগারের জ্বলন্ত ডগা
আর তার চারপাশে জমা ছাইগুলো সব মেঘ
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: সিগারেট মানুষকে
ঈশ্বরের নিকটবর্তী করে
শীত আয় তই তই
শীত এলে বিদেশী পাখির মতো উড়ে আসে ভাপা পিঠা
সিদ্ধ ডিম ভেসলিন মাফলার
গাছে গাছে ফুটে ওঠে কুয়াশার ফুলকপি বাঁধাকপি শিম
আগুনেরা ছড়িয়ে পড়ে দিকবিদিক উষ্ণতার ফেরিওয়ালা হয়ে
পুরানো খুঁটির মতো একদিকে হেলে থাকে ক্লান্ত সূর্য
আর আমরা লেপের ভিতর থেকে মাথা বের করি
একটা শতবর্ষী কাছিমের মতো—
যেন বসন্ত এসেছে
শীত এলে শিকারীর হাতে ঝোলে ডানাক্লান্ত
নিশ্চল পাখিদের দেহ
ঠান্ডা চর্বি আর সব পালকের শব
বনের সুবাস মাখে ঘুমভাঙ্গা শহুরে পিকনিক
আগুনের পাশ ঘেঁষে জড়ো হয় কোল্ডস্টোরেজ—মব
আয় শীত আয় তই তই
অমিতাভের কবিতাগুলোর ন্যারেটিভ পড়তে পড়তে তার চিন্তার খোল দেখতে পেলাম। ঈশ্বরের শতমুখে শত শত সিগারেট জ্বলছে, যা সংবিধির অন্তগত একটি টিপ্পনি। এ কবিতাটিকে অ্যান্টি পয়েমের তালিকাভুক্ত করা যায়। বিশেষ করে নিকোরার পাররার চিন্তার ছাই যেন মেঘের মতো উড়ে এসে বাংলার আকাশে মেঘ তৈরি করেছে। ধন্যবাদ অমিতাভ, ওপারে, তোমার ঈশ্বরের কাছে সিগারেট নিয়ো না। সেখানেও সং আছে বিধির তরিকায়।
মাহবুব হাসান
নভেম্বর ০৩, ২০২২ ০৭:১৩