প্রত্যাগমন
বিড়াল নিয়ে একটু যেন বেশিই আদিখ্যেতা রাণুর। ব্যাপারটা ওর খুব ছোট বয়েস থেকেই। এখন কলেজপড়ুয়া এই মেয়েটির ওর পোষা বিড়াল নিয়ে মাতামাতিটা দেখে অনেকেই বেশ হাসাহাসি করে। অনেকে গায়ে পড়ে সাবধান করে যায়, বিড়াল থেকে নাকি অনেক রোগের জন্ম হয়! কিন্তু কে শোনে কার কথা! দিন দিন বিড়াল নিয়ে ওর বাড়াবাড়িটা যেন বেড়েই চলেছে। আমরা এসব একরকম মেনেই নিয়েছি। অবশ্য এতে রাণুর নয়, ওর মায়ের খাটাখাটনিটাই বেশি। বিড়ালদের খাওয়ানো, ওদের পরিত্যক্ত মলমূত্র পরিষ্কার করার হ্যাপা ওর ওপর দিয়েই যায়। আর বাইরের কুকুর থেকে ওদের বাঁচানোর ব্যাপার তো আছেই। কেন জানি না, সুযোগ পেলেই কোথা থেকে দুটো কালো কুকুর এসে ওদের ধাওয়া করে। একদিন সুযোগ পেয়ে তো একটাকে একেবারে ধরাশায়ী করে ফেলল। ছোট্ট বিড়ালটা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল। মুহূর্তের মধ্যে বাড়িতে শোকের ছায়া ঘনিয়ে এল। রাণু কলেজ থেকে ফিরে খবরটা জানতেই কান্নায় ভেঙে পড়ল। সেদিন ভালো করে খেলও না। বিড়ালটাকে উঠোনের এক কোণে কবর দেওয়া হলো। বাড়িতে তখন সবেধন নীলমণি আর একটাই বিড়াল ‘তুরতুরি’। তবে অচিরেই এক থেকে সংখ্যাটা চার হয়ে গেল। একসঙ্গে তিনটি শাবকের জন্ম দিল ও। রাণুর সেদিন সেকি আনন্দ! সারাক্ষণ বাচ্চাদের দেখভাল করছে। কিন্তু সাবধানী মা মাঝে মাঝেই বাচ্চাদের অন্য জায়গায় নিয়ে যায়। তখন রাণুর সেই আকুল হয়ে খোঁজ করার ব্যাপারটা দেখি আর ভাবি, এই ছেলেমানুষির শেষ কোথায়!
একদিন তো বাড়িতে একটা বিড়াল নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড। বিড়ালটার নাম রাণু খুব আদর করে দিয়েছিল ‘তুলতুলি’। আসলে খুব ছোট বয়েস থেকেই ওটা বেশ মোটাসোটা। বড্ড বেশি মানুষঘেঁষা। রাণুকে দেখলেই মিউ মিউ ডাকে অস্থির করে তোলে। রাণুও তাকে পারলে সারাক্ষণ কোলে করে রাখে। সেই তুলতুলিকে একদিন একটা কুকুর এসে কামড়ে দিয়ে গেল। তুলতুলির আশ্চর্য প্রাণশক্তি! সে কিন্তু মরল না। মরলে হয়তো ভালোই হতো। কিন্তু জীবন-মৃত্যু তো অলক্ষ্যে কার বিধানে হয় যেন। যাহোক, তুলতুলি বেঁচে গেল বটে কিন্তু তার কোমরের হাড় ভেঙে যাওয়ায় চলনশক্তি কমে গেল। কদিন ওকে নিয়ে খুব দৌড়াদৌড়ি হলো আমাদের। আমাদের বারাসাতে যে একটা পশু হাসপাতাল আছে আর সেখানে যে নিত্যদিন কুকুর বিড়াল গরু এমনকি পোষা বেজির চিকিৎসা করাতেও লোকেরা আসে, সেটা প্রথম জানলাম। হাসপাতাল ডাক্তার ওষুধ ট্র্যাকশন অনেক কিছু করেও ওকে বাঁচানো গেল না। রাণুর কান্না আর থামে না। ভালো করে খেলও না সেদিন। আমাদের সবারই মন খুব খারাপ হয়ে থাকল অনেকক্ষণ। রাণুর মন অবশ্য বেশ ভার হয়ে থাকল বেশ কয়েক দিন।
ক্রমশ আমাদের বাড়ির মার্জারকুলের বংশবৃদ্ধি হতেই থাকল। বছর না ঘুরতেই সংখ্যাটা হয়ে দাঁড়াল আট। এদিকে রাণুর বিয়ে ঠিক হয়েছে। প্রতিবেশীরা ঠাট্টা করে বলতে শুরু করল, রাণু কি তার শ্বশুরবাড়িতে বিড়ালগুলোকে সঙ্গে নিয়ে যাবে! আমরা হাসি এসব কথা শুনে, রাণুও হাসে। দিন যায় মাস যায়। অবশেষে রাণুর বিয়ের দিন এসে গেল। যথাসময়ে রাণু আমাদের গৃহাঙ্গন শূন্য করে দিয়ে শ্বশুরবাড়িতে চলে গেল। তার সাধের বিড়ালগুলো রয়ে গেল আমাদের সঙ্গেই। ওদিকে রাণুর শ্বশুরবাড়িতে একটাও বিড়াল নেই। ওরা ওসব পছন্দ করে না। তাই রাণুর প্রথম প্রথম খুব মন খারাপ করত ওখানে। রাস্তা থেকে দু-একটাকে ধরে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। বাড়ির বাইরে এঁটোকাঁটা ফেলে ডাকে। কেউ কেউ এলেও ওগুলো খেয়েই পালায়। কী আর করা! রাণু তাই ফোনেই ওর মায়ের কাছ থেকে তার পোষা বিড়ালগুলোর খবর নেয়।
২
এভাবেই চলছিল। কিন্তু বিড়ালের সংখ্যাবৃদ্ধির কারণে দিন দিন রাণুর মায়ের কাজের বহর বেড়েই চলেছে। বাড়তে বাড়তে সংখ্যাটা এখন দশ। আমি নিজেও খানিকটা ব্যাপারটিতে জড়িয়ে পড়েছি। মনে মনে ভাবি, যে আমি বিড়ালদের তেমন পছন্দ করতাম না, সেই আমিই আজ তাদের জন্য আলাদাভাবে মাছ কিনে আনি। কুকুরদের তাড়াই। কেন জানি না ওই অবলা প্রাণীগুলোর মধ্যে রাণুর কোমল হাতের ছোঁয়া অনুভব করি। তবে রাণুর মা যেন একটু বেশি রকমের জড়িয়ে পড়েছে বিড়ালগুলোর পরিচর্যায়। সে যখনই রান্নাঘরে ঢোকে, সবগুলো সমস্বরে ডাকতে থাকে। কিছু একটা খাবার দিলে তবেই স্বস্তি। রাণুর মা ওদের সঙ্গে কথা বলে। ওরা নাকি ওর কথা শোনেও। রাগ করলে ঘাপটি মেরে থাকে আর আদর করলে প্রায় গা বেয়ে ওঠে। এসবই আমি কাছ থেকে দেখি। দুজনে মিলে এখন আমাদের নিত্যদিনের কাজের মধ্যে বিড়ালদের দেখভাল করাও একটা কাজ বলে গণ্য করি। আশপাশের লোকজনের বাঁকা ভ্রুভঙ্গি অবলীলায় উপেক্ষা করি। এভাবেই দিন চলে যায়।
কিন্তু এভাবে তো দিন চলে না! মাঝে মাঝেই প্রতিবেশীরা অভিযোগ করে যায় বিড়ালগুলোকে নিয়ে। এদের কেউ কেউ ওদের রান্নাঘরে ঢুকে রান্না করা মাছ বা দুধ চুরি করে খেয়ে আসে, এমনকি পলিথিন ব্যাগ ভর্তি কাটা মাছ মুখে নিয়ে ছুট দেয়। এবার আমাদের একটু বিব্রত হবার পালা। সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে তো সমস্যা বাড়বে বৈ কমবে না। কীভাবে এর সমাধান ঘটানো যায়, তাই ভাবি এখন আমরা নিত্যদিন। ব্যাপারটা রাণুকে জানানোও হলো। দু-চারটে বিড়াল কি ছেড়ে দিয়ে আসব মাছের বাজারে? এ প্রশ্নের জবাবে কাঁদো কাঁদো স্বরে রাণু বলে, ‘তাতে যদি সমস্যার সমাধান হয়, করতেই পারো। তবে এরপরে তোমরা আবার আফসোস কোরো না যেন! তবে একবার পশু হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পারো, মা বিড়ালগুলোর লাইগেশন করা যায় কি না!’
রাণুর সঙ্গে কথা বলার পরেও অনেকগুলো দিন চলে যায়। ইতোমধ্যে বিড়ালের সংখ্যা বৃদ্ধি হয়ে দাঁড়িয়েছে বারোতে। রাণুর কথামতো একদিন বারাসাত হাসপাতালেও গিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা জানাল, এসব নাকি একমাত্র বেলগাছিয়াতেই হয়। বিড়ালগুলো নিয়ে বেলগাছিয়া যাওয়া এক ঝকমারি। তাই ওই চিন্তাটা দূর করতেই হলো মন থেকে। কিন্তু এদিকে বিড়াল নিয়ে সমস্যা বেড়েই চলল। কোনো কোনো প্রতিবেশীরা এখন বেশ রাগ করেই অভিযোগ জানিয়ে যায়। এক দজ্জাল মহিলা তো বাড়ি বয়ে এসে খুব গালমন্দ পেড়ে গেল একদিন। অবশেষে তাই একদিন সত্যি সত্যি আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হলো অন্তত পাঁচটা মেয়ে বিড়ালকে মাছের বাজারে ছেড়ে দিয়ে আসব বলে। এ ব্যাপারে পাশের বাড়ির জগন্নাথের শরণাপন্ন হলাম। ও হৃদয়পুর মাছবাজারে মাছ বিক্রি করে। একদিন ঠিক হলো, ও একটা থলিতে বিড়ালগুলোকে পুরে নিয়ে যাবে। অনেকেই নাকি এইভাবে বাড়ির বিড়াল বাজারে ছেড়ে দিয়ে যায়। কথামতো একদিন ও এলো এক সকালে এবং নানা রকম কায়দাকানুন করে পাঁচটা বিড়ালকে আলাদা ব্যাগে পুরে নিয়ে চলে গেল। ব্যাপারটা খুব সহজসাধ্য ছিল না। বিড়ালগুলো গজরাচ্ছিল ব্যাগের ভিতর থেকেই। মুখআঁটা থাকায় ওরা বেরোতে পারছিল না। একসময় জগন্নাথ বিড়ালগুলোকে সাইকেলের হ্যান্ডেলে ঝুলিয়ে ক্রিং ক্রিং শব্দ করতে করতে চলে গেল। ওর গমনপথের দিকে অনেকক্ষণ একদৃষ্টে তাকিয়ে রইল রাণুর মা।
একবুক স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে বাড়িতে ঢুকলাম। রাণুকে খবরটা ওর মা ফোন করেই জানাল। ওই প্রান্তের কথা কিছু শুনতে পাচ্ছিলাম না। দেখলাম স্বল্পভাষী রাণুর মা কেমন যে গুম মেরে গেছে। আমি আর কথা বাড়ালাম না। চা খেয়ে খবরের কাগজ নিয়ে বসলাম। বর্ধমানের এক গ্রামে পুকুর সংস্কার করতে গিয়ে পাওয়া গেছে পালযুগের এক বিষ্ণুমূর্তি, জেলের ঘানি টানছেন সঞ্জয় দত্ত আর বিরাট কোহলি শচীনের রেকর্ড ভাঙবেন এমন সব খবরের মধ্যে ডুবে যেতে যেতে ভুলে গেলাম বাড়িতে হঠাৎ করেই ঘটে যাওয়া পাঁচটা বিড়ালের স্থানান্তরণের কথা। দুপুর নাগাদ জগন্নাথ বাজার থেকে ফেরার পথে থলেগুলো ফেরত দিয়ে গেল। রাণুর মাও সোৎসাহে জগন্নাথের দেওয়া বিবরণ শুনতে লাগল। কীভাবে ওগুলোকে থলে থেকে বের করে বাজারে ছাড়া হলো। সেই মুহূর্তে ওগুলো কী করছিল। অন্য বিড়ালের ভয়ে কীভাবে এদিকে-ওদিকে লুকোচ্ছিল। রাণুর মা গোগ্রাসে কথাগুলো গিলছিল যেন। একসময় জগন্নাথ চলে গেল।
দুপুরে খাওয়ার টেবিলে রাণুর মাকে দেখলাম কেমন বিমনা। ভালো করে খেলই না। বুঝলাম ওর কষ্টটা। হঠাৎ ওই বিড়ালগুলোর এই অনুপস্থিতি ও ঠিক মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। আমি আর ওকে বৃথা সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলাম না। জানতাম সময়ে সবই সয়ে যাবে। দুপুরে ভাতঘুম সেরে বিকেলের চা খাবার সময়ে রাণুর মা প্রথম মুখ খুলল, ‘সবগুলোকে একসঙ্গে না পাঠালেই পারতে’! আমি একটু অবাকই হলাম। এই সিদ্ধান্ত তো আমি একা নিইনি! তবু ওকে বললাম, ‘যা হবার হয়ে গেছে, একটু একটু করে ভুলে যাবার চেষ্টা করো’। ও আমার কথার কোনো জবাব দিল না। রাতের খাবার টেবিলে দেখলাম, রাণুর মা প্রায় কিছুই খাচ্ছে না। বিড়ালগুলোর জন্য ওর মন খারাপের কথা ভেবে তখন আমার নিজেরই খারাপ লাগতে লাগল। কিন্তু কী করব ভেবে পেলাম না। বেশি অপেক্ষা না করে রাতের ‘দাদাগিরি’ অনুষ্ঠান দেখার পরেই শুয়ে পড়লাম।
মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেল রাণুর মায়ের অস্ফুট কান্নার আওয়াজে। ধড়মড় করে উঠে দেখি, ও ঘুমোয়নি। একমনে কেঁদেই চলেছে। বাকি রাতটা আমারও ঘুম হলো না। নানাভাবে রাণুর মাকে বোঝাবার চেষ্টা করলাম। তাতে আরও ওর কষ্টটা বেড়ে গেল। একসময় তো প্রায় উচ্চ স্বরে ও কাঁদতে লাগল। ভাবলাম, এইভাবে কেঁদে যদি ও একটু সুখ পায়, পাক না! হয়তো এর মধ্যেই নিহিত আছে এই বিচ্ছেদবেদনা ভোলার মন্ত্রগুপ্তি। এইসব ভাবতে ভাবতে কখন যে আবার ঘুমিয়ে পড়েছি, মনে নেই। হঠাৎ রাণুর মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙল। ‘দেখো তো বাইরে বিড়ালের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি যেন। ‘আমি ওর কথায় বেশি আমল না দিয়ে পাশ ফিরে শোবার চেষ্টা করলাম। এবার ও আমাকে প্রায় ধাক্কা দিয়ে দিয়েই ঘুম থেকে জাগাল। এবার আমি সত্যি সত্যি দরজার বাইরে অতি মিহি স্বরে বিড়ালের ডাক শুনতে পেলাম। আমাকে উঠতেই হলো। সকাল তো হয়েই গেছে অনেকক্ষণ। অন্য দিন তো এই সময়েই উঠে পড়ি! দ্রুত দরজা খুলে হতবাক হয়ে গেলাম। জগন্নাথের নিয়ে যাওয়া পাঁচটা বিড়াল পরপর দাঁড়িয়ে আছে আমাদের বাড়ির উঠোনে। রাণুর মায়ের আনন্দ ধরে না। সব কটাকে ‘আয়’ ‘আয়’ বলে ডেকে একসঙ্গে রান্নাঘরে নিয়ে গেল। ছোট্ট একটা পাত্রে ঢেলে দিল বাসি দুধ। বিড়ালগুলো কেমন যন্ত্রচালিতের মতো চুকচুক করে দুধটুকু খেয়ে ফেলল। রাণুর মায়ের মুখচোখ তখন সকালের আলোয় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা পরে ওর মুখে হাসি দেখলাম।
বাইরে তখন শরতের রোদ রীতিমতো ঝলমল করছে। জবাগাছের ডালে তখন সদ্য ফোঁটা ফুলের বাহার। শিউলিতলায় তখন ঝরে পড়া সাদা ফুলের ঘটা। গাছভর্তি টগর ফুল যেন হাসছে আমাদের দিকে চেয়ে।
সকালটা যেন একটু বেশি রকমের স্নিগ্ধ, সুন্দর ও মনোরম মনে হতে লাগল আমার।
খুব ভালো লাগলো সুশীল দার লেখা। গল্পকার ও পত্রিকা সম্পাদক কে জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
ড.প্রসূন মাঝি
অক্টোবর ০১, ২০২২ ১৫:৩০
বাহ! রাকা, বৌদি ও আপনার বিড়াল-প্রীতি আমি দেখেছি। তাই মনে হল গল্প পড়ছি না, যেন নিজের চোখে দেখছি। বিড়াল এমনই যতদূরেই ফেলে আসা যাক, মনিবের বাড়িতে ঠিক ফিরে আসে। আমার ছোটবেলায় দেখেছিলাম মামাবাড়িতে।
নীহারুল ইসলাম
অক্টোবর ০১, ২০২২ ১৫:১৩
দারুণ গল্প। মনে হয় গল্প নয়, সত্যি ঘটনা।
অনির্বাণ জানা
অক্টোবর ০১, ২০২২ ১৬:৫৬
যাক! তাহলে আবার দেখতে পাওয়া যাবে। কত মিষ্টি বিড়ালগুলো! খুব সুন্দর করে লিখেছেন। বেশ উপভোগ্য।
তরুণ কুমার কর্মকার
অক্টোবর ০১, ২০২২ ১৬:৫০
মন ভালো হয়ে যাওয়ার গল্প...???? বিড়াল তো বাঙালির সমাজ জীবনে, সাহিত্যে পশুপ্রেমের একটি চমৎকার উপাদান।আপনার কলম দিয়ে সেটা আবার উদ্ভাসিত হলো...????
কুমার অজিত দত্ত
অক্টোবর ০১, ২০২২ ১৮:২৬
দাদা- শুভ অপরাহ্ন। আপনার গল্পটি এইমাত্র শেষ করলাম ।গল্প নিয়ে কথা বলার যোগ্যতা আমি নিশ্চয়ই রাখিনা---আমি তো ঠিক,অফিশিয়াল ক্রিটিক নই । তবে বুঝতে পারি আমাদের জীবন যাপনের নেপথ্যে যে ছোট ছোট অনুষঙ্গ নির্মাণ হয় ,ছোট ছোট আনন্দ ও বেদনার চিহ্ন ভেসে ওঠে, এই লেখা তারই একটি উজ্জল স্মারক ।পৃথিবী যেমন মানুষের ,পৃথিবী অন্য প্রজাতিরও বটে। গান, নৃত্য, আবৃত্তি, চলচ্চিত্র হয়ে শিল্পের সকল শাখা স্পর্শকারী আপনার অন্তর্গত সত্তায় বিকশিত,অন্য সেই নির্মাণ -বিনির্মাণের ছায়া আমি এই লেখাতেও আন্দাজ করতে পারি সহজেই। এই গুনপনা সবার থাকে না। বলতে কি ,আপনি সেই বিরল উত্তরাধিকারী আমাদের চেনা বলয়ে। অযুত কৃতজ্ঞতা। মামুন হুসাইন
মামুন হুসাইন
অক্টোবর ০১, ২০২২ ১৮:১০
পড়লাম। এক টানে তরতরিয়েই। এবং ভেবে দেখছি যে জীবন থেকে নেয়া ঘটনা গল্পের ভঙ্গিতে আপনি বলে যাচ্ছেন বহুকাল ধরেই। সেই মুন্সীয়ানা আপনার অধিকৃত। আজ এর নাম হলো গল্প। গল্পের রূপকাঠামোয় জীবনেরই কথা। চলুক এই গল্পযাত্রা।
নিশাত জাহান রানা
অক্টোবর ০১, ২০২২ ২১:০২
এ এক মাতৃত্বের গল্প
অভিনব বসু
অক্টোবর ০১, ২০২২ ২২:১৮
খুব ভালো লাগল গল্পটা সুশীলদা। গল্পের চরিত্র রানু আমার নিজের বোনের নাম। এমন ঘটনা আমার বাসাতেও ঘটেছিল শৈশবে। তাই মনে হলো এ যেন আমার গল্প। ভালো লিখুন ও ভালো থাকুন দাদা।
মঈনুল হাসান
অক্টোবর ০১, ২০২২ ২৩:০৩
পড়লাম। মতামত চেয়েছেন। ইতস্তত বোধ করছি। প্রথমত আপনি অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ জন। মতামতে পক্ষপাত ঘটিয়ে ফেলবো না তো! দ্বিতীয়ত, এত তাৎক্ষণিক মন্তব্যে গল্পটার প্রতি সুবিচার হবে তো! পরে ভেবে দেখলাম, তেমন কোনো কেউ কেটা তো নই। কিছু যদি এদিক ওদিক করেই ফেলি, গল্পের মূল্য তাতে একবিন্দুও কমবে না। বরং বন্ধুকৃত্যটা অন্তত করা হবে। সুতরাং, অভীঃ। কিছু বেফাঁস বেচাল হলে আপনার মার্জনার দাক্ষিণ্যে বঞ্চিত নিশ্চয় করবেন না। ঠিক কি না! প্রথমেই বলি এত আটপৌরে ঘটনা যে গল্পের বিষয় হয়ে উঠতে পারে, তাতেই চমকিত হয়েছি। এ কাহিনির সুর আমার মতো সুরকানাকেও কানখাড়া হতে বাধ্য করেছে। এ কি নিবিড় গোপন শোক! এরই নাম কি শ্লোক, যার উৎসার আমরা শুনেছি তমসার তীরে? অথচ কোথাও তার এতটুকু উচ্ছ্বাস বা বহিঃপ্রকাশ নেই।নিখাদ শোকের ভাষা যেমন হয়: রুদ্ধস্বর, কাটাকাটা, গরগরে।এ ঠিক তেমনি মর্মন্তুদ। ভাষার এই নিরাভরণ সারল্য আর প্রমিতি অনেক অব্যক্ত ব্যঞ্জনাকে জড়িয়ে রেখেছে এর শব্দের মাঝের ফাঁকে ফাঁকে। এ এক রকম বিবশ বোধের মধ্যে নিয়ে যাচ্ছে আমাকে। তার মধ্যে গল্পের চালচিত্রে নড়াচড়া করছে বিমূর্ত একটা ছবি। তা সমস্ত প্রাণের অন্তর্লীন ঐক্যের। যাতে একটা পশুও মানুষের সমান সংবেদনিষিক্ত হয়ে উঠেছে। ভালো থাকুন, আরও লিখুুন, অন্তত আমার মতো কারও জন্যে। অনেক শুভেচ্ছা।
জয়কৃষ্ণ কয়াল
অক্টোবর ০২, ২০২২ ১৬:৫২
গল্প হলেও সত্যি! বেড়ালদের (এবং গল্পকারের) জয় হউক!!
অংকুর সাহা
অক্টোবর ০২, ২০২২ ১৮:১৮
গল্প হলেও সত্যি! বেড়ালদের (এবং গল্পকারের) জয় হউক!!
অংকুর সাহা
অক্টোবর ০২, ২০২২ ১৮:২০
প্রত্যাগমন পড়েছি। আখ্যানের উপর গল্পকারের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অনাড়ম্বর গল্পটির প্রাণ। বাস্তবতার গল্পরূপ অপত্য স্নেহের প্রগাঢ় অভিব্যক্তিরূপে ধরা পড়ে। প্রাণী প্রেম এবং প্রাণীর প্রেম গল্পটিকে হৃদয়গ্রাহী করেছে। যারা বস্তাবন্দী হয়ে গেল দূরবর্তী হাটে, তারাই এত পথ পাড়ি দিয়ে কোন টানে পরদিন সকালে সেই দরজায় এসে 'মিঞাও' বলে দাঁড়ায় সেখানেই গল্পের প্রাণটি নিহিত। একটি পরিবার এতগুলো বিড়ালের প্রতিপালন করে অপরিসীম ধৈর্যের সঙ্গে, নানাবিধ জ্বালাতন সয়ে অসম্ভব মমতায় লালন করে তাঁরা। ধীরে ধীরে প্রাণীগুলোর সাথে অচ্ছেদ্য সম্পর্কে জড়িয়ে যায় পরিবারটি । সরল অনাড়ম্বর ভাষায় লেখক প্রায় ঘটনা বিহীন গল্পটি বলে যান অবলীলায়। মনোমুগ্ধকর গল্প।
লুৎফর রহমান
অক্টোবর ০৩, ২০২২ ০৭:৫৩
শেষপর্যন্ত মমতা এবং মায়াই জিতে যায়। খুব সাধারন একটি ঘটনা অথচ অসাধারণ হয়ে উঠেছে, মর্ম স্পর্শ করেছে। গল্পের গাঁথুনি ভালো লাগলো। সবচেয়ে ভালো লাগলো যেটা তা হলো, গল্পটিতে রয়েছে মানুষের দরদী ও মমতাময় হয়ে ওঠার বার্তা।
তাপস মজুমদার
অক্টোবর ০৪, ২০২২ ১৪:১১
আপনার লেখা নিয়ে আলোচনা করার যোগ্য নই। গল্প বলার মাস্টার। মার্জার পাঁচালি খুবই উপভোগ্য আসলে জীবনের একটা অংশ বই তো নয়।
অমিতাভ
অক্টোবর ০৪, ২০২২ ১৯:৩১
দারুন এক মানবিক বোধের গল্প। মন আর্দ্র হয়ে উঠল। চমৎকার গাঁথুনি আর সরল বর্ণনা টেনে নিয়ে যায়, ধরে রাখে। এক নিঃশ্বাসে শেষ করলাম। ধন্যবাদ গল্পকারকে।
মোহাম্মদ বারী
অক্টোবর ০১, ২০২২ ১৪:৪৩