ভাবের গান

 

তুমি যে আমি সেটা জানলা না রে
তুমি যে আমি সেটা জানলা না 
শুধু সব চোখের ভুলে মানলা না রে 
শুধু সব চোখের ভুলে মানলা না॥

আসো যাও কাছে দূরে 
নিজ বাঁশি পরের সুরে বাজে
মন সর্বখানে ঘুরে 
ভুলতে যে চাও মিছা সকল কাজে
আপনা থেকে পালাইতে তো পারলা না রে
আপনা থেকে পালাইতে তো পারলা না॥

এক জল থেকে দুই জল হইলে 
অগ্নি হতে আরেক অগ্নি জ্বলে 
কবে যে আলদা হইলাম
একই দেহে আমরা ছিলাম দুইজনা 
আপনা থেকে পালাইতে তো পারলা না রে
আপনা থেকে পালাইতে তো পারলা না॥

 

ক্ষমো, অন্ধের কী-বা দোষ বলো 
শুধু হাত ধরে বলতেছি চলো॥
   
কী-বা ভাব কখন কোথায়
ভাবতে দিন চলে যায় তারে
তবু জানতে কি কেউ পারে কোথা হতে 
হায়, কখন কে পায় আলো॥

কী-যে খুঁজি হারায়ে আজি ভাবি
ঘাসের ভেতর পুরানো দিনের ছবি
পড়ে আছে কার?
ওরে, আবার পাব কি দেখা স্বরূপ তোমার?
তাই চোখ দুটো ছলোছলো॥

দেখতেছি আমি দেখার অধিক তাকে
আমার চক্ষু নাই রে জ্ঞানও দুর্বিপাকে
বিধি, তবু কেমনে দেখা দিল!॥

 

বাবু চলেন মার্সিডিজে
আমরা চলি নিজে নিজে
রোদের ভিতর ভিজে ভিজে
জুতা-সেন্ডেল নাই রে
ওরে ওরে ও-আল্লা, বাবুর পায়ের পাতা নরম রে॥

গাড়ির ভিতর বলে এ.সি
ও-বাবা রে গেছি গেছি
বাইরে ক্যানে এত্ত গরম রে॥

বাবুর গায়ে কোর্তা ভারি
পরনে মোর ছেঁড়া শাড়ি
নাই কি-রে মোর লজ্জা শরম রে॥

পিঁপ-পিঁপ-পিঁপ পিঁপিঁপ-পিঁপিঁপ
সামনে কে-রে তোরা!
গাড়ির নিচে পড়বি নাকি
কেয়ার করি থোরা।
গাড়ির নিচে আমরা তো নাই
কী যেন কী রে
গাড়ির নিচে কাঁটায় ভরা কাঠের খড়ম রে॥

 

অকারণ আর কারণ মিলে করছে রঙ্গ
ও রাধে নিদ্রা ভঙ্গ॥

কী আছে যে রাধের মনে
নিত্যানন্দে থাকে সদাই নিজের সনে
লয়ে সব সাঙ্গপাঙ্গ॥

কোন আলোতে চমকে উঠে
গিয়েছিলাম আপনি ছুটে
করিতে তোমারই সঙ্গ॥

ভ্রমি আমি রঙ্গপুরে
মিছামিছি অন্তর্যামী হয়ে ঘুরে
খুঁজে মোর অর্ধঅঙ্গ॥

 

কী জানি কী হইছে রে আমার
সুইচবোর্ডে সুইচ টিপি তবুও আন্ধার॥

মেঘগুলা সব রইছে রে ঠায়
চাঁদটা ক্যানে মিছা দৌড়ায়
কে জানে সে কোন দিকে যায়
টাসকি খায়া দেখতে আছি বেচারা বান্দা॥

এই ফাঁকে এক সাধু ভায়া
বলে আমায় একলা পায়া
চলো একটু দূরে যায়া 
দুইজনাতে বুদ্ধি করি ঐ ঘরে সান্ধার॥

আমি বলি ওরে ভাই রে 
ঘরে আমার আলো নাই রে 
তাই তো আমি আইছি বাইরে 
এই না শুনে দেখি সাধুর লাগতেছে ধান্ধা॥

 

কোন আলোতে অন্ধ হইলা  
কোন আঁধারে দেখতে পাও 
ডাঙার ওপর দুলছে তোমার নাও॥

যে-ফুলেরই গন্ধে আকুল 
গিয়া দ্যাখো কাগজের ফুল  
সেই ফুলকেই ধরলে আবার কাঁটার আঘাত পাও॥

জলেতে ঝাঁপ দিলা তুমি 
হায় রে ধু-ধু মরুভূমি 
পিপাসাতে শুধুই মরীচিকার কাছে যাও॥

দেহ ভেবে ছায়ার পিছে
ঘুরে ঘুরে মরো মিছে
আপনাকে খুঁজতে গিয়া পরের দিকে চাও॥